আকাশ তুমি মেঘের সখা

সবুজের ঠাস বুনটের মাঝ দিয়ে এক চিলতে নীল আকাশ। তারই মধ্যে সাদা মেঘের অলংকারছবি: নেয়ামত উল্লাহ

বাদামি বসন্তের এই প্রথম সূর্যস্নান; দেবদারুর কান ঘেঁষে বউরঙা আলোয় ভেসে যায় তার আবরণ।

অনেক ভোরে জানালার পর্দা সরিয়ে দেখি, আকাশের বাক্যালাপ চলছে মেঘের সঙ্গে। বাতাসের প্রচ্ছন্ন আশকারায় মেঘদল ছড়িয়ে পড়ছে গোটা আকাশের বুকে। সে এক আদিম খেলা! কখনো সমান্তরাল, কখনো গোলাকার, কখনো অস্পষ্ট ছড়ানো ইতস্তত বিক্ষিপ্ত কাব্যময় রং।

সহজ কথা যায় না সহজে বলা! তার জন্য এমন উপকরণ লাগে। সারা রাত অপেক্ষার পর ঘুমঘোরে অবসন্ন আকাশের ক্যানভাসে তুলির টান মেঘের। কতক্ষণ, কত দিন, কত মাস, বছর অপেক্ষা করলে তবে এমন রং লাগে? গাঢ় নীলে চুমু খেয়ে হলুদ আর কমলা পাশাপাশি তুলির টানে সুনীল দ্যুলোকে অনুরাগের রং ছড়িয়ে দিচ্ছে, আর আমি বিহ্বল চোখে দেখছি পর্দার এপাশ থেকে।

সমাদরে আদর বাড়ে; সম্মানে বাড়ে সোহাগ। এমন রঙের সোহাগের জন্য গোটা রাত অপেক্ষা করেছে আকাশ। পাহাড়ের চোখে তখনো ঘুম লেগে আছে, পরপর একে অপরের গায়ে হেলান দিয়ে সারি সারি শুয়ে আছে আয়েশে, আশ্লেষে।

কুয়াশাভেজা গাছের মাথা থেকে টুপটাপ জল ঝরে; ভোরের পাখিরা পাতার গায়ে চুমু দিয়ে শিশিরে ঠোঁট ভেজায়। হাওয়ার গায়ে লেগে থাকে অলিখিত নেশা; পাখিদের সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ের সারি হলদে কমলা রঙের আলো মেখে জেগে ওঠে।

কিছু অভূতপূর্ব মুহূর্তের কথা মুখে বলতে নেই, লিখতে নেই, শুধু চোখ মেলে দেখতে হয়! তার পাশে চুপ করে বসতে হয়; সময়কে সময় দিতে দিতে কখন সময় নিশ্চুপে চলে যায়! তাই সময় থাকতে মুহূর্তকে বেঁধে রাখতে হয়, আলগোছে!