কাজে সার্থকতা যুক্ত করতে প্রয়োজন প্রবল ইচ্ছাশক্তি
না, সব কাজ আপনার নয়। তবে যেখানে আছেন বা থাকেন, সেখানকার দায়দায়িত্ব তো আপনাকে নিতেই হবে।
কর্ম এক অদ্ভুত যজ্ঞ। বেঁচে থাকতে, টিকে থাকতে ও সফল হতে হলে কর্মযজ্ঞে জয়ী হওয়া চাই শতভাগ। পৃথিবীটা যখন হাতের মুঠোয় বন্দী, তখন এখানে টিকে থাকতে হলে হাতের খেল তো আপনাকেও জানতে হবে। কর্মযজ্ঞে কখনো সফল, আবার কখনো অসফল।
কর্মে সার্থকতা যুক্ত করার জন্য প্রয়োজন প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং কাজে আনন্দ অনুভব করা। কেউ যখন আনন্দ নিয়ে কাজে মনস্থির করে, তখন কাজটিকে আপন মনে হয়, করতেও শখ জাগে। ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
বড়দের কাছ থেকে শুনেছি, কোনো কাজ বা পেশা ছোট নয়, সব পেশার সমান মর্যাদা। আপনি কী কাজ করেন? ছোট নাকি বড় প্রতিষ্ঠানে? সেটা বড় বিষয় নয়। আপনার ওপর অর্পিত দায়িত্ব কতটুকু নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করছেন, এটাই মুখ্য।
প্রত্যেকেই নিজস্ব জায়গা থেকে শ্রম ও মেধা ব্যয় করে বলেই আমাদের জীবন যাপন মধুর হচ্ছে।
এবার আসি প্রত্যেকেই কি কাজে পটু? নিজের কাজটা ভালো করে করছে তো? নাকি একটু ফাঁকি? অজুহাত থেকে শুরু হতাশাগ্রস্তের কারণে নিজ দায়িত্বে পেছনে হটে যাচ্ছেন না তো? আবার অনেকে মনে করে থাকেন, আমি এত কাজ করব কেন? সব কাজ কি আমার?
না, সব কাজ আপনার নয়। তবে যেখানে আছেন বা থাকেন, সেখানকার দায়দায়িত্ব তো আপনাকে নিতেই হবে। তা–ও নেবেন না জানি। কিন্তু আপনার চারপাশটাকে সুন্দর রাখতে অথবা পাশের মানুষগুলোকে ভালো রাখতে কিছু দায়িত্ব তো নিতেই হবে, তা না হলে আপনি কর্মস্থলে হোক কিংবা পরিবারে অথবা আপন মানুষদের কাছে বিশেষ কেউ হয়ে উঠতে পারবেন না।
কর্মযজ্ঞে মনস্থির করতে যেসব প্রশ্নের সঙ্গে আগে নিজেই মোকাবিলা করে নেবেন— প্রথমত, আমি কীভাবে পারব? এই যে এক কথা, চেষ্টা না করেই উল্টো বিপরীত মানুষটাকে চাপে ফেলে দেওয়া ইচ্ছা করে। এই প্রশ্ন থেকে বের হয়ে আসুন। চেষ্টা করলে যেকোনো কাজে সুফল আসবে, সবটা না হলেও খানিকটা।
দ্বিতীয়ত, এই কাজ আমার নয়, আমি কেন করব? অনেক সময় পরিস্থিতি অনুযায়ী অন্যের কাজ নিজের কাঁধে আসতে পারে, এসে যায়। যদি আসে, ধরে নেবেন আপনাকে যোগ্য মনে হয়েছে বলেই কাজটি দেওয়া হয়েছে। যদি খুব বেশি ক্ষতি না হয়, কাজ করে দিতে অসুবিধা কোথায়? আমার কাজ হলেই আমি করব, অন্য কারও কাজ করব না, এ রকমটা যেন না হয়। বলা যায় না, কোনো নতুন কাজে আপনার জন্য সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যায়।
তৃতীয়ত, জানি না। এ কথাটা মারাত্মকভাবে কানে ঘষা খায়। প্রশ্ন করলে, কিছু খোঁজ করলে যখন বলা হয় জানি না। জিজ্ঞাসা সেখানেই, যেখানে উত্তর পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কেউ কোনো তথ্য জানতে আপনার শরণাপন্ন হতেই পারে। তাই বলে দয়া করে বলবেন না, জানি না। জেনে জানানোর চেষ্টা করবেন। এতে আপনিও জানলেন, অন্যজনকেও খুশি করতে পারলেন। মনে রাখবেন, বর্তমানে তথ্যই শক্তি।
চতুর্থত, ভুলে গেছি। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়তেই পারে। নানা চাপেও অনেক কাজ ভুলে যায়। কিন্তু আপনি এই কথাগুলো নিশ্চয়ই বছরের পর বছর চলে গেলেও ভোলেন না। যেমন কে কটু কথা বলল? ঝগড়া-ফ্যাসাদ ইত্যাদি। তবে দায়িত্ব পালনে কেন ভুলে যান? যা আপনার অবশ্যই পালনীয়, কর্তব্য ও দায়িত্ব সবার আগে।
বন্ধু, ভৈরব বন্ধুসভা