সময় নিয়ন্ত্রণ করার উপায় ‘ডোপামিন ডিটক্স’

সময় নিয়ন্ত্রণ করার উপায় ‘ডোপামিন ডিটক্স’

নির্দিষ্ট কোনো কাজ যখন আমাদের মনে ভালো লাগা সৃষ্টি করে, তখন আমরা সে কাজই শুধু করতে থাকি। এর জন্য কোনো সময় বরাদ্দ না করে প্রতিনিয়ত নিজের ভালো লাগাকে গুরুত্ব দিয়ে এটার প্রতি সময় ব্যয় করে থাকি। একটা সময় পর বুঝতে পারি, আমাদের অনেক সময় নষ্ট হয়ে গেছে। এ কাজের ফলে আমাদের খুব ভালো কিছু অর্জন হয়নি, শুধু সময় ব্যয় ছাড়া। অথচ সময় কত মূল্যবান জানা সত্ত্বেও আমরা সময়ের অপব্যবহার করছি প্রতিনিয়ত।

যেমন বর্তমান সময়ে কারণে-অকারণে ইন্টারনেট ব্যবহার করে সময় ব্যয় করি। আদৌ গুরুত্বপূর্ণ কি না, এসব না জেনেই নির্দিষ্ট কোনো কিছু করার মধ্য দিয়ে সময় ব্যয় করি। এর কোনো দৃশ্যমান ফল আমাদের চোখে পড়ে না, যা আমাদের জন্য ইতিবাচক হতে পারে। বরং উল্টো নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামে স্ক্রল করতে গিয়ে কোনো কারণ ছাড়াই শুধু ভালো লাগা থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করি।

ডোপামিন হচ্ছে এমনি একটি নিউরোট্রান্সমিটার রস, যা আমাদের কোনো কাজে ভালো লাগা থেকে নিঃসরণ হয় এবং আমরা সে কাজ করতে আগ্রহী হই। আর সেটা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে ভয়াবহ খারাপ অভ্যাসে পরিণত হয়। তখন এই ভালো লাগার কাজকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজন ডোপামিন ডিটক্স, যা আমাদের উৎপাদনশীল কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শেখায় এবং বর্তমানে কোনো কাজ করার সময় মনোযোগ ধরে রাখে। ডোপামিন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ডোপামিন ডিটক্সও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ভালো লাগলেই সে কাজ সব সময় করা যাবে না, সে কাজের নিয়ন্ত্রণও প্রয়োজন এবং সেটা আমাদের নিজেদেরই করতে হবে।

দ্রুত চলার এই আধুনিক যুগে আমরা প্রতিনিয়ত ছুটে চলছি। কোথায় আমাদের থামতে হবে, কতটুকু সময় থামতে হবে, কীভাবে থেমে আবার শুরু করতে হবে ইত্যাদি বিষয়গুলো ভাবার মতো সময়ও নির্ধারণ করতে পারি না। এর ফলে আমরা অস্থির হই এবং মন বিক্ষিপ্ত হয়। জীবনের লক্ষ্য আমরা ভুলে যাই বা লক্ষ্য স্থির করেও সে লক্ষ্যের জন্য নিয়মিত কাজ করে এগিয়ে যেতে পারি না। ‘ডোপামিন ডিটক্স’ বইটিতে এসব বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ করার সহজ উপায়গুলো ধারাবাহিকভাবে বিশ্লেষণ করে তুলে ধরা হয়েছে। লেখক খুব গুছিয়ে জীবনের বাস্তব অপ্রিয় সত্য কথাগুলো যুক্তিসহ উপস্থাপন করেছেন।

নিজের লক্ষ্য স্থির করা, সে লক্ষ্য অর্জনের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা এবং তা বাস্তবায়ন করার জন্য সময়মতো কাজ করা আমাদের অবশ্যই উচিত। এসব করতে গিয়ে মনের ভালো লাগা বা যা ব্রেনেও ভালো লাগা সৃষ্টি করে, তা বেশিক্ষণ করতে গিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের প্রতি উদাসীন হওয়া আমাদের পিছিয়ে রাখে। তাই এসব মরীচিকার পেছনে না ছুটে ডোপামিন ডিটক্সের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে এগিয়ে যাওয়াই উত্তম।

একনজরে
বই: ডোপামিন ডিটক্স
লেখক: থিবো মেরিস
অনুবাদক: মহিম সন্ন্যাসী
প্রকাশনী: রূপসী বাংলা
প্রচ্ছদ: মো. জাহিদুল ইসলাম
প্রথম প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২৮ ভাদ্র ১৪২৯
মূল্য: ২০০.০০ টাকা মাত্র
মোট পৃষ্ঠা: ৭২

বন্ধু, নরসিংদী বন্ধুসভা