শরতের নান্দনিক সৌন্দর্য

শরতের পড়ন্ত বিকেলে নীল আকাশে সাদা মেঘ আর কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে নৌকায় ঘুরছেন প্রকৃতিপ্রেমীরাছবি: হাসান মাহমুদ

শরৎ আসে শীতের জন্ম মাস হয়ে। গ্রীষ্মের দুর্বোধ্য গরমের পরে তীব্র বৃষ্টি নিয়ে বর্ষা আসে। এরপর আকাশের মেঘের ধূসরতা কাটিয়ে দেয় হাওয়ায় হাওয়ায় শরৎ এসে। ভেসে বেড়ায় নীলাকাশে সাদা ধবধবে টুকরা টুকরা মেঘের ভেলা। মাঝেমধ্যে হঠাৎ একপশলা বৃষ্টি এসে নির্মল করে দেয় প্রকৃতি। টুকরা মেঘের আড়াল হতে একফালি চিক চিক উজ্জ্বল রোদের কিরণে ঝলমল হয়ে ওঠে গাছপালা, নদীর কূলঘেঁষে কিংবা মাঠে ঘাটে কাশফুল দুলে ওঠে এলোমেলো হয়ে। হাওরের স্বচ্ছ পানিতে ভাসে সাদা ও গোলাপি রঙের শাপলা, পদ্মফুল। ভোরে আমন ধানের ডগায় ডগায় কুয়াশার শিশির বিন্দু নুয়ে পড়ে, শিউলি ফুলের ঘ্রাণে ঘ্রাণে চারপাশ মুগ্ধতায় ভরে ওঠে। জবা, টগর, দোলনচাঁপার সঙ্গে জুঁই, কেয়া, মালতী, মল্লিকা, মাধবী, ছাতিম, বেলি, জারুল, নয়নতারা, ধুতরা, ঝিঙে, রাধাচূড়ার সঙ্গে শিশুর নির্মল হাসির মতো হেসে ওঠে প্রকৃতি। ভোরে দোয়েল-কোয়েল পাখিদের গানে কবিদের ঘুম ভাঙে।

প্রকৃতির এই বৈচিত্র্যময় ঋতু দেখে রবীন্দ্রনাথের কথায় উঠে এসেছে, ‘ডাকিছে দোয়েল গাহিছে কোয়েল, তোমার কাননসভাতে/ মাঝখানে তুমি দাঁড়ায়ে জননী, শরৎকালের প্রভাতে...।’ এভাবেই যেন শরৎ আসে ঋতুর রানি হয়ে হিমেল হাওয়ায় শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে। শরৎ কেবল ঋতুর রানিই নয়! অন্যদিকে শরৎকে ধরা হয় কিশোরীর মনের মতো নির্মল। কখনো উচ্ছল আবার কখনো গোমড়ামুখো। হঠাৎ বৃষ্টিতে এলোমেলো হয়ে যাওয়া মন হোক কিংবা উজ্জ্বল অরুণালোকে আনন্দিত মন; শরতের এমন প্রকৃতির সঙ্গে তুলনা হয় না অন্য কোনো ঋতু বৈচিত্র্যের।

শরতের এই রূপ–লাবণ্যের সৌন্দর্য হৃদয় মন্দিরে প্রস্ফুটিত করে স্বর্গীয় হেলায়-দোলায়। শরতের এমন নান্দনিক সৌন্দর্যে বিমোহিত হওয়ার দিনে শরীরের যত্ন নিয়ে মনকে ভালো রাখুন। শরীর ভালো থাকলে আপনার মনও মেতে উঠবে ফুরফুরে আনন্দে। শরতের হিমেল হাওয়ায় হাওয়ায় রাঙিয়ে তুলুন নিজেকে— কাব্যিক উপমার লাইনে।

বন্ধু, কক্সবাজার বন্ধুসভা