আমার পছন্দের শীতকাল

সাধারণত অক্টোবরের শেষের দিকে শীত শীত ভাব আসে। তবে বাপু এবার তো বর্ষাকালই শেষ হচ্ছে না। ছোট থেকেই শীতকাল আমার ভারি পছন্দের। উহু, কী ঠান্ডা! কিন্তু এবার? শীত কোথায়? বর্ষায় বাইরে কাদা, পানি আর সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব। ভাল্লাগে না! বাইরে পড়তে গেলে যে–ই একখানা গাড়ি পাশ দিয়ে যায়, জামাকাপড়ের কী একটা অবস্থা। হুহ!

মা বলেন, এই বৃষ্টি দিয়েই শীত আসবে। শীতের আগে বর্ষা আগে দেখিনি। হে হে দারুণ। কম্বল, লেপ, চাদর, সোয়েটার মুড়ি দিয়ে গুটিসুটি হয়ে বসে থাকা আর একটা জম্পেশ ঘুম। কত সুন্দর না শীতকালটা?

তবে এই আনন্দ আবার মাটিও হয়। ভাবছেন তো কিসের কথা বলছি? সকাল সকাল হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় কম্বল ছেড়ে উঠে পড়ো আর প্রাইভেটে যাও। কে যে এসব আবিষ্কার করে, বুঝি না! তবে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো, সকালের কুয়াশা দেখায়ও দারুণ অনুভূতি আসে! যদিও সাজেকে বসে দেখি না, আমার বাসার জানালা দিয়ে দেখি। হি হি! তবে ইচ্ছা আছে শীতের সময় পাহাড় দেখার। ইসসস কবে যে বড় হব!

সেই সকালে সবাই নিবিড় ঘুমে আচ্ছন্ন থাকে। এ সময়ে এক কাপ চা না থাকলেই নয়। আহা, চায়ের কাপের গরম ধোঁয়া অনুভব করতে করতে সূর্যোদয়টা একদমই মিস করা যাবে না। প্রকৃতির কত সুন্দর রূপ, অথচ আমরা ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিই। আর আমার কাছে মজার কাজ হলো মুখ থেকে ধোঁয়া বের করা। ব্যাপারটা জোস না? বড় হতে চাই, আবার মনে হয় ছোট হয়ে যাই।

এই তো সেদিনের কথা, আমি তখন ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী, তখনও ঢ্যাং ঢ্যাং করে ব্যাট–কক৴ নিয়ে আম্মুকে লুকিয়ে লুকিয়ে মাঠে দৌড়ে যেতাম। তবে দুঃখের বিষয় হলো, গতবার একদমই খেলা হয়নি। এবারও না হতে পারে পড়াশোনার যে চাপ। বাপরে বাপ! বলা নাই কওয়া নাই নোটিশ এলো ২৪ নভেম্বর পরীক্ষা। শুনে তো মাথায় ছাদ ভেঙে পড়ার পালা। ওপরে তাকিয়ে দেখি পড়েনি ছাদ, ঠিক জায়গায়ই আছে।

বাহ্‌! দেখেছ শীতকালের সেরা একটা জিনিসই বলা হয়নি৷ বলছি বলছি। বারবিকিউ পার্টির কথা বলাই হয়নি। প্রতিবছর ভাবি ছাদে সবাই একটা বারবিকিউ পার্টি দেব। শুধু প্ল্যানই হয়, আদৌ পার্টিটা হয় না। তবে প্রতিবেশীদের সঙ্গে এক দফা পিকনিক খাওয়া বাদ যায় না। আসলে শীত মানেই আমার কাছে সোয়েটার পরে প্যাকেট হয়ে গুটিসুটি মেরে থাকা। এবারের শীতকে একদমই মিস করতে চাই না। ব্যাডমিন্টনও খেলতে হবে। উহু! সামনে নাকি পরীক্ষা, তাহলে পড়বে কে?

শিক্ষার্থী, নবম শ্রেণি, সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, ঝালকাঠি