আজ আচমকা আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়া শুরু করল। অনেকেই ভাবেনি আজ বৃষ্টি হবে। আকাশ মেঘলা ছিল ঠিকই কিন্তু ততটা না। যতটা মেঘলা থাকলে বৃষ্টি পড়ে এবং তুফান আসে।
অনু তুফানকে প্রচণ্ড ভয় পায়। অনুর বয়স যখন ৮ কিংবা ৯ ছিল। তখন একদিন প্রচণ্ড ঝড়-তুফান হয়েছিল। অনুদের টিনের ঘর ছিল। টিনের ঘরে অল্প বাতাসেই বিকট শব্দ হতো। তুফানের শব্দে অনু ভয় পেয়ে যায়। প্রচণ্ড ভয়ে কাঁথার ভেতরে লুকিয়ে পড়ে। বাবা মিয়া উদ্দিন ছেলেকে সাহস দেওয়ার জন্য বিভিন্ন রকমের গল্প বলা শুরু করেন। তারপরও অনু কাঁথার ভেতর থেকে বের হয় না।
টিনের চালে টপাটপ আম পড়ার শব্দ। ঝড়ে আমের ডাল ভেঙে পড়ার শব্দ অনুকে রীতিমতো ভয় পাইয়ে দেয়। ভয়ে অনু কাঁপতে থাকে। অনুর বাবা জাপটে ধরে অনুকে সাহস দিতে লাগলেন, অথচ কিছুতেই অনুর ভয় কাটে না।
অনুর বাবা আজ পৃথিবীতে নেই। আজকের প্রচণ্ড ঝড়-বাতাস অনুর মনে প্রচণ্ড নাড়া দিচ্ছে। ঝড় অনুকে তেমন ভয় দেখাতে পারছে না।
ছোটবেলার মতো এখন টিনের চাল নেই। টিনের বেড়া নেই। আছে কংক্রিটের ছাদ। আম কিংবা গাছের ডাল পড়লেই তাতে কি। এখন আর কাঁথার ভেতর লুকাতে হয় না। অনুর মনে আজ প্রচণ্ড নাড়া দিচ্ছে সেই দিনগুলো, যে দিনে ভয়ে কাঁথায় লুকিয়ে যেত। বাবার সাহসী গল্প শুনেও মনে সাহস পেত না।
আজ তাঁর বাবা নেই। তপু নামে ৭ বছরের একটি ছেলে আছে। তপু ঝড় দেখার জন্য জানালার গ্লাস খুলে বাইরে চেয়ে আছে। অবাক হয়ে কী যেন দেখছে, কী যেন ভাবছে। তার মনে কোনো ডরভয় নেই। হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি উপভোগ করছে।