আষাঢ়ের বৃষ্টি আর আগস্টের ভয়

ভারী বৃষ্টির কারণে ফেনী শহরে পানি জমেছেছবি: লেখক

গত বছর আগস্টের ভয়াবহ বন্যার কারণে এখন ফেনীতে একটু বৃষ্টি হলেই সবার মধ্যে ভয় কাজ করে। আষাঢ় মাস হওয়ায় বিগত কয়েক দিন ধরেই টানা বৃষ্টি হচ্ছে। তবে গত পরশু দিন সন্ধ্যা থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে শহর থেকে গ্রাম—সব জায়গায় আবারও পানি জমতে শুরু করেছে। গতকাল শহরের অধিকাংশ এলাকায় কোমরসমান পানি দেখা গেছে। সবার মধ্যে আবারও ভয় কাজ করছে। এ বছর আবারও কি বন্যা হবে?

মঙ্গলবার সকালে ঘুম থেকে উঠে নাশতা খেয়ে অফিসের উদ্দেশে রওনা হলাম। জেলা শহরে অফিস। বাড়ির সামনের রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। পুকুরভর্তি পানি। অনেকেই মাছ ধরায় ব্যস্ত, স্মরণ করিয়ে দিল গত বছরের আগস্টের কথা। রাস্তামুখে খালি একটি সিএনজিকে দূর থেকে ডেকে দাঁড় করালাম। সিএনজিচালক নাশতা করার জন্য বের হয়েছেন এবং কোথায় মাছ ধরা যাবে, তা দেখতেও!

ফেনী সরকারি কলেজ মাঠের বর্তমান অবস্থা
ছবি: লেখক

গোবিন্দপুর বাজারে আমাকে নামিয়ে দিল। তারপর আরেকটি সিএনজি করে ফেনী এলাম। শহরের মানুষ হইচই করছে। যেসব দোকান প্রথম ফ্লোরে, তারা মালামাল সরানোতে ব্যস্ত। যেসব ভবনের বেজমেন্ট রয়েছে, তারাও ব্যস্ত পানি থেকে বেজমেন্ট ফ্লোর রক্ষার জন্য। ফেনী বড় মসজিদ থেকে পায়ে হেঁটে অফিসে যাচ্ছি। পথে দেখা রহিমা বেগমের (৪৫) সঙ্গে। তিনি ছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে গ্রাম থেকে শহরে এসেছেন বোনের বাসায় যাবেন বলে, বন্যার শঙ্কায় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে।

একাডেমি রোডে পানির কারণে কোনো গাড়ি চলাচল করছে না। জেলা শহীদ মিনারের পাশে যে মোবাইল দোকানগুলো রয়েছে, সব দোকানে পানি প্রবেশ করেছে। ফেনী কলেজের মাঠে পানি জমেছে। শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজে হাঁটুপানি দিয়ে হেঁটে স্কুল-কলেজে যাচ্ছে। কেউ কেউ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে না গিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। কেউ কেউ মোবাইল বের করে এসব দৃশ্যের ছবি তুলছে, ভিডিও করছে। আতঙ্ক দেখা গেল হকারদের মধ্যে। রাস্তায় পানি জমলে, বন্যা হলে তাদের আয় বন্ধ হয়ে যায়, সংসারে অভাব-অনটন দেখা দেয়।

কার্যনির্বাহী সদস্য, ফেনী বন্ধুসভা