সূর্যোদয়, সমুদ্র আর শান্তির ঢেউ

ভোরের নীরবতা আর সমুদ্রের হাওয়ার মিষ্টি গন্ধে মন ভরে উঠছিলছবি: লেখকের সৌজন্যে

সকালে ঘুম থেকে উঠে বাইকে চেপে কুয়াকাটার সূর্যোদয় দেখতে রওনা হলাম, যেন এক অন্য জগতে প্রবেশ করেছি। ভোরের নীরবতা আর সমুদ্রের হাওয়ার মিষ্টি গন্ধে মন ভরে উঠছিল। আকাশ ধীরে ধীরে রং বদলাচ্ছিল। প্রথমে নীলের মৃদু ছোঁয়া, পরে কমলা আর সোনালি আলোতে সমুদ্রের ঢেউ যেন নেচে উঠছিল। সূর্যের প্রথম আলো সমুদ্রের ঢেউকে আঘাত করলে সোনালি রঙে, যেন সমুদ্র নতুন জীবন পায়।

সূর্যোদয় দেখার পর বাইক নিয়ে কুয়াকাটার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখলাম। লাল কাঁকড়ার বিচে পৌঁছে চোখ খুলে তাকালাম—হাজার হাজার ছোট কাঁকড়া বালুর ওপর ছুটছিল, যেন প্রকৃতির এক রঙিন উৎসব। সেই দৃশ্য থেকে ফেরার পথে দেখলাম, স্থানীয় জেলেরা তাজা ইলিশ মাছ ধরে আনছেন। পাশের হোটেলে মাছ কিনে তা রান্না করলাম। গরম ভাজা ইলিশ আর ভাতের স্বাদ আজও মনে আছে; সমুদ্রের নোনা হাওয়া আর মাছের গন্ধ মিলে এক অদ্ভুত সুখ আনে মনে।

এরপর চলে গেলাম ঝাউবনের সবুজায়নে। ঢেউয়ের শব্দ, হাওয়ার মিষ্টি গন্ধ আর গাছের নরম নড়াচড়ার সঙ্গে মিশে যেন সময় থেমে গেছে। এরই মধ্যে সমুদ্রের বুকে একটু ফটোশেসন করে নিলাম। সেখানে দাঁড়িয়ে মনে হলো, কেবল প্রকৃতিই কথা বলছে।

কুয়াকাটার শেষ প্রান্তে পৌঁছে দূর থেকে সুন্দরবনের সবুজ ছায়া দেখতে পেলাম। সমুদ্র, বন ও আকাশ মিলেমিশে অপূর্ব সৌন্দর্য তৈরি করেছিল। কুয়াকাটা আমার জন্য কেবল একটি জায়গা নয়; এটি একটি অনুভূতি, যেখানে সূর্যোদয়, সমুদ্রের ঢেউ আর প্রকৃতির শব্দ মিলেমিশে স্বপ্নের মতো মুহূর্ত সৃষ্টি করে। প্রতিটি পদক্ষেপে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ, হৃদয়ে এক শান্তির ঢেউ নিয়ে আসে।

বন্ধু, কেরানীগঞ্জ বন্ধুসভা