আলোকিত মানুষ গড়ার অনন্য বাতিঘর

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদছবি: কবির হোসেন

আমাদের সময়ের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, বক্তা ও মানবিকতার পথপ্রদর্শক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার। তিনি নৈতিক, মানবিক ও সাংস্কৃতিক জগতের এক অনন্য নক্ষত্র। স্যার শিখিয়েছেন, মানুষের মধ্যে সম্ভাবনা আছে, ভালোবাসা আছে, আছে মনুষ্যত্ব—সেগুলো শুধু জাগিয়ে দিতে হয়। স্পর্শ করতে হয়।

তিনি এমন একজন শিক্ষক, যিনি ক্লাসরুম ছাড়িয়ে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছেছেন। তাঁর স্বপ্ন একদিন দেশের সবাই বই পড়বে, ভাববে, ভালো মানুষ হবে। স্যার মনে করেন, শিক্ষা মানে শুধু পাস করানো নয়, এর মানে একজন মানবিক মানুষ তৈরি করা। তাঁর শিক্ষকতা যেন শিল্প, কথা যেন কবিতা, আর প্রতিটি শব্দ যেন আত্মার জাগরণ।

১৯৭৮ সালের বিশেষায়িত পাঠচক্র আজ বিশাল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। এ কেন্দ্র নৈতিক ও মানবিক শিক্ষার এক অনন্য মিলনমেলা। এর আলো ছড়িয়ে গেছে হাজারো শিক্ষার্থীর জীবনে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মূল কথা—পড়ো, জানো, শেখো এবং মানুষ হও। তিনি বিশ্বাস করেন, ভালো বই না পড়লে ভালো মানুষ হওয়া যায় না। তিনি প্রশ্ন করার সাহসী কণ্ঠ। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও মানবিকতার অবক্ষয়ের জন্য কথা বলেন।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এমন একজন শিক্ষক, যিনি ক্লাসরুম ছাড়িয়ে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছেছেন
ছবি: লেখকের সৌজন্যে

এই একবিংশ শতকে মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়ের দিনগুলোয় তিনি দেখিয়ে দেন, মানুষ হওয়ার চর্চা কখনো থেমে যায় না। তাঁর ভাবনায় শিক্ষকতা মানে চাকরি নয়, এটা এক সাধনা। এটা সমাজের ভবিষ্যৎ গড়ার প্রত্যয়। স্যারের দর্শন হলো, শুধু সফল হওয়া নয়, মানুষ হওয়াটাই শ্রেষ্ঠত্ব। তিনি তাঁর বক্তৃতা, লেখালেখি ও সাহিত্যচর্চায় সারা জীবন মানুষকে এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন।

আলোকিত মানুষ গড়াই যাঁর জীবনের স্বপ্ন—সেই শিক্ষাবিদ, দার্শনিক ও মানবতাবাদী মানুষ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের আজ জন্মদিন। এ দিনে শুধু তাঁকে শুভেচ্ছা জানাই না, তাঁকে অভিবাদন জানাই তাঁর সংগ্রাম, সততা, আর আলোকিত পথচলার জন্য। শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও প্রেরণার সঙ্গে বলি, শুভ জন্মদিন স্যার। ভালো থাকুন জীবনের প্রতিটি দিন। আপনি আমাদের সময়ের এক অনন্য বাতিঘর।

লেখক, কবি, সাংবাদিক ও সংগঠক