সিউল ওয়ার্ল্ড আর্ট ফেয়ার ফেস্টিভ্যালে রিফাত

দেশ-বিদেশে নিজেদের সংস্কৃতি, সমাজের নানা অসংগতি ও না–বলা কথা তুলে ধরতে চান রিফাত ইসলামছবি: রিফাত ইসলামের সৌজন্যে

২০১১ সাল থেকে মূকাভিনয়ের চর্চা করছেন রিফাত ইসলাম। তবে নাচ ও অভিনয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন গল্প উপস্থাপন করে দর্শকদের মুগ্ধ করে যাচ্ছেন ছোটবেলা থেকেই। সেটি ছাপিয়ে ধীরে ধীরে নিজেকে একজন মূকাভিনয়শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। এবার মূকাভিনয় নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া যাচ্ছেন রিফাত। ১৩ থেকে ১৯ জুন সিউলে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক শিল্প উৎসব ‘সিউল ওয়ার্ল্ড আর্ট ফেয়ার ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’–এ অংশ নেবেন তিনি।

উৎসবে মোট তিনটি পরিবেশনা মঞ্চায়ন করবেন রিফাত। পরিবেশনাগুলো হলো ‘ক্রাইসিস অব ইমোশন’, ‘টু ইন ওয়ান’ ও ‘বাঙালির ঐহিত্য পুতুলনাচ’। এ বিষয়ে এই শিল্পী বলেন, ‘দ্বিতীয়বারের মতো দেশের বাইরে পারফর্ম করতে যাচ্ছি। এর আগে গিয়েছিলাম ভারতের ত্রিপুরায়। এবার ডাক পড়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। কোরিয়ার মাটিতে বাংলাদেশের সংস্কৃতি তুলে ধরার সুযোগ পাব, এটা আমার কাছে সত্যিই আনন্দের।’

কোরিয়া সরকারের অর্থায়নে এই উৎসবে আরও অংশগ্রহণ করবেন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, চীন, জার্মানি, ইতালি, কাজাখস্তান, এস্তোনিয়া, আফ্রিকা, ভারত, কোরিয়া ও বাংলাদেশের শিল্পীরা।

জলছবি মাইম থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক রিফাত ইসলাম প্রথম আলো বন্ধুসভার সঙ্গেও যুক্ত। তিনি দীর্ঘ ৯ বছর ধরে বন্ধুসভা করছেন। বর্তমানে কিশোরগঞ্জ বন্ধুসভার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। মূকাভিনয়ে নিজের পথচলার বিষয়ে রিফাত ইসলাম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আধুনিক নাচের মাধ্যম সংস্কৃতি অঙ্গনে পথচলা শুরু। দেখলাম, আধুনিক নাচটা সবাই গ্রহণ করছে না। ভাবলাম, নাচের সঙ্গে অন্য কোনো কৌশল মিশিয়ে গল্পনির্ভর কিছু করা যায় কি না। যেখানে নাচ ও অভিনয় দুটোই থাকবে। সেভাবেই শুরু। ২০১১ সালে কিশোরগঞ্জের সাংস্কৃতিক সংগঠন জলছবির সঙ্গে যুক্ত হই। তখন থেকেই মূলত মূকাভিনয়ের চর্চা শুরু।’

রিফাত ইসলাম

মজার ব্যাপার হলো, ২০১৬ সালে গাজীপুরে প্রথম আলো বন্ধুসভার বন্ধু সমাবেশে রোবট নৃত্য করেছিলেন রিফাত। সেদিন মূকাভিনেতা মীর লোকমানের মূকাভিনয় সরাসরি দেখার সুযোগ হয়। এরপরই আবিষ্কার করেন, এত বছর নাচের সঙ্গে যে কৌশল ব্যবহার করেছেন, সেটা মূলত মূকাভিনয়। এবার দক্ষিণ কোরিয়ায় পারফর্ম করার আমন্ত্রণ পেয়েছেন এই মীর লোকমানের মাধ্যমেই। সহযোগিতা করেছেন জলছবি মাইম থিয়েটারের সদস্য ফরহাদ ইসলাম।

নিজের এই পথচলায় প্রথম আলো বন্ধুসভারও অবদান দেখেন রিফাত। জানান, বন্ধুসভার মাধ্যমেই দেশের বিভিন্ন স্থানে তাঁর পরিচিতি ঘটতে থাকে। বন্ধু সমাবেশসহ বন্ধুসভা জাতীয় পর্ষদের বড় বড় অনুষ্ঠানে পারফর্ম করার মাধ্যমে অনেকের সঙ্গেই পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়। ভবিষ্যৎ স্বপ্ন নিয়ে এই শিল্পী বলেন, ‘দেশ-বিদেশে নিজেদের সংস্কৃতি, সমাজের নানা অসংগতি ও না–বলা কথা তুলে ধরতে চাই। স্বপ্ন আছে মূকাভিনয় নিয়ে একটি স্কুল করার। যেখানে পরবর্তী প্রজন্ম মূকাভিনয়শিল্পের চর্চা করবে।’