গ্রীষ্মকাল মানেই রোদে ঝলমলে দিন, আর চারদিকে টক-মিষ্টি ফলের ছড়াছড়ি। কাঁচা আম, পেয়ারা, তেঁতুল, আনারস—সবই যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে। এই টক ফলগুলো মেখে খাওয়ার মজাই আলাদা! তাই ভৈরবে বন্ধুসভার বন্ধুরা মিলে ঠিক করল, এই গ্রীষ্মে হয়ে যাক এক ব্যতিক্রমী সন্ধ্যার আয়োজন। নামও পেয়ে গেল— ভর্তাবিলাস। ভাবনা থেকে দ্রুত কাজের সিদ্ধান্ত।
দিন ঠিক হলো ২ মে, শুক্রবার। সময় বিকেল ৫টায়, প্রথম আলো ভৈরব অফিসে সবাই একত্র হবে। নির্ধারিত সময়ের কিছু আগেই অফিসের পরিবেশে দেখা গেল উচ্ছ্বাস। একে একে বন্ধুরা হাজির হন।
সাধারণ সম্পাদক এরফান হোসেন নিজের চাষের মরিচ ভেজে নিয়ে এসেছিল টক-মিষ্টি স্বাদের সঙ্গে ঝালের বাড়তি ছোঁয়া যোগ করতে। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাফিস ও কার্যনির্বাহী সদস্য প্রিয়াংকা নিয়ে এল গাছের টাটকা কাঁচা আম। জেন্ডার ও সমতাবিষয়ক সম্পাদক মেধা নিয়ে আসেন ঠান্ডা লেবুর শরবত, গরমের ক্লান্তি দূর করার দারুণ পানীয়।
কেউ শসা কাটছিলেন, কেউ পেয়ারা টুকরা করছিলেন, কেউবা আনারসের টুকরাগুলোতে লবণ, মরিচ আর চিনি মিশিয়ে মেখে দিচ্ছিলেন। সবাই মিলে এক টেবিল ঘিরে দাঁড়িয়ে কাজ করছিলেন, যেন এক ছোট্ট মিলনমেলা। কথা, হাসি, ঠাট্টায় চারপাশে আনন্দের ঢেউ ওঠে।
কার্যনির্বাহী সদস্য সাইফুর রহমান দায়িত্ব নিয়ে প্রস্তুতি পর্ব সামলাচ্ছিলেন। কে কী করবেন, কোন ভর্তায় কী লাগবে, কোন ফল কেমন করে মাখবেন— সব দেখভাল করছিলেন দক্ষ হাতে। মাঝেমধ্যেই স্বাদ পরীক্ষা হচ্ছিল। ‘আরেকটু লবণ লাগবে না?’ ‘ঝাল কম হচ্ছে মনে হয়!’— এমন মজার মন্তব্যে পরিবেশ হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। একেকবার চেখে দেখে ঠিক করা হচ্ছিল, যাতে সবকিছুর স্বাদ থাকে ঠিকঠাক।
আয়োজনে ছিল কাঁচা আমের ভর্তা, আমের আচার, পেয়ারা মাখা, শসা মাখা, তেঁতুলের ভর্তা, আনারস মাখা, মিক্সড ফ্রুটস মাখা, লেবু মাখা আর ঠান্ডা লেবুর শরবত। টক, ঝাল, মিষ্টি—তিন স্বাদের অপূর্ব মেলবন্ধনে সৃষ্টি হয় এক ভিন্ন স্বাদের বৈশাখী আড্ডা।
‘ভর্তাবিলাস’ আয়োজনের পেছনে ছিল উপদেষ্টা ওয়াহিদা আমিনের আন্তরিক সহায়তা। তাঁরই পরামর্শে ও অর্থায়নে ভর্তা বিলাসের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়। উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা সুমন মোল্লা ও আলাল উদ্দিন। তাঁদের উপস্থিতি আয়োজনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
সভাপতি, ভৈরব বন্ধুসভা