হেমন্তের সকালে কুয়াশা-শিশিরে শীতের আভাস

ঘাসের ওপর ঝরে পড়া শিশিরবিন্দু সূর্যের আলোয় ঝলমল করছেছবি: লেখক

উত্তরবঙ্গের জেলা লালমনিরহাটে হেমন্তের আগমনে প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে শীতের পরশ। ভোরের মাঠে ঝরে পড়ছে শিশিরবিন্দু, আকাশে জমে উঠছে হালকা কুয়াশা, আর সকালে কিংবা সন্ধ্যার পর শরীরজুড়ে লাগছে ঠান্ডা হাওয়া। হেমন্তের হাত ধরেই শীতের আগমনবার্তা।

ভোরবেলা গ্রামের পথ দিয়ে হাঁটলে দেখা যায়, চারদিক সাদা কুয়াশায় মোড়া। দূরের গাছ, খড়ের গাদা, ধানখেত, সবই যেন তুলার মতো মিহি কুয়াশায় ঢেকে গেছে। সূর্য উঠতে দেরি হচ্ছে, আর উঠলেও আলো যেন একটু ফিকে। মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা পাকা ধানের শিষে ঝরে পড়া শিশিরবিন্দু সূর্যের আলোয় ঝলমল করছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার চরাঞ্চলের কৃষক আবদুল হামিদ বলেন, ‘ভোরে মাঠে নামলে হাত-পা ঠান্ডায় জমে যায়। এ বছর মনে হয় শীতটা একটু আগেই আসবে।’

আরেক কৃষক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘ধান কাটা শুরু করেছি। কুয়াশা পড়ায় সকালে কাজ কিছুটা ধীর হয়, কিন্তু দুপুরে সূর্য উঠলে আবহাওয়া বেশ ভালো থাকে।’

গ্রামীণ জনপদে এখন সকাল সকাল চুলায় ধোঁয়া উঠছে। কেউ কেউ আবার সকালে গরম চা বা ভাপা পিঠা খেয়ে নিচ্ছেন। শহরের বাজারেও গরম কাপড় বিক্রির হিড়িক পড়েছে। বিশেষ করে ফুটপাতের পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতার ভিড় দেখা যাচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকেই উত্তরাঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমছে। নভেম্বরের শেষে শীতের প্রভাব আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দিনের বেলা এখনো সূর্যের তেজ কিছুটা টের পাওয়া যায়, তবে সকাল-সন্ধ্যার সময় ঠান্ডা হাওয়া বইছে। ছোট শিশুরা কোট, টুপি, সোয়েটার পরে স্কুলে যাচ্ছে। শহরের অফিসগামী মানুষও অনেকে এখন চাদর বা পাতলা জ্যাকেট পরে বের হচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর হেমন্তের শুরুতেই ঠান্ডা একটু বেশি। অনেকে আবার বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই আবহাওয়ার ধরনে এসেছে পরিবর্তন।

তবে কৃষকদের মুখে এখন তৃপ্তির হাসি। কারণ, শীত মানেই ফসল তোলার সময়। কুয়াশা-শিশিরে ভেজা এ সময়টাই ধান কাটার ও আলু লাগানোর উপযুক্ত সময়।

বন্ধু, লালমনিরহাট বন্ধুসভা