ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত এক গ্রামের তরুণ শাহরিয়ার ইমন। ছোটবেলা থেকেই নাচ, গান, অভিনয়, আবৃত্তি, বিতর্ক ও উপস্থাপনার মতো সহশিক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন। পড়াশোনার ফলাফল ততটা উজ্জ্বল না হলেও নিজের আগ্রহের জায়গায় কখনো হাল ছাড়েননি। বরং প্রতিটি ব্যর্থতাকে রূপান্তর করেছেন নতুন উদ্যমে।
ইমনের শিক্ষাজীবন শুরু হয় উচাখিলা উচ্চবিদ্যালয়ে। ২০২১ সালে এসএসসি ও ২০২৩ সালে ময়মনসিংহ কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরবর্তী সময়ে ভর্তি হন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি শিল্প-সংস্কৃতিকে নিজের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ করে নেন। ময়মনসিংহ বন্ধুসভার হয়ে দীর্ঘদিন সক্রিয় থেকে নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।
বিশেষ করে নাচই ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি। ছোটবেলা থেকে নৃত্যশিল্পে আগ্রহী ইমন ২০২০ সালে অর্জন করেন ‘গুণী শিশুশিল্পী সম্মাননা’। এই স্বীকৃতি তাঁর নৃত্যচর্চাকে আরও বেগবান করে।
ইমন সেই সাধনা এবার এক নতুন ইতিহাসের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। গত ২৩ আগস্ট ইমন পেয়েছেন এক বিরল সুযোগ। যুক্তরাজ্যের ওয়ালসাল, বার্মিংহাম শহরের একটি নামকরা নৃত্যস্কুল তাঁকে ডান্স টিচার হিসেবে অফার দিয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, তিনি বছরে ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ড বা প্রায় ৬০ লাখ টাকা বেতন পাবেন। এখন চলছে প্রশিক্ষণ। দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষ হলে তিনি পাড়ি জমাবেন যুক্তরাজ্যে।
উল্লেখ্য, এই ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে ভিসা পাওয়া অত্যন্ত দুষ্কর। ইমন তাঁর সহশিক্ষা কার্যক্রম ও নৃত্যে দক্ষতার কারণেই এ সুযোগ লাভ করেছেন।
শাহরিয়ার ইমন প্রমাণ করেছেন, প্রতিভা কখনো গ্রামে-শহরে, দারিদ্র্যে বা ব্যর্থতায় আটকে থাকে না। অধ্যবসায় ও আগ্রহ থাকলে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকেও একজন তরুণ পৌঁছে যেতে পারেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে। তাঁর এই সাফল্য নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে নতুন করে অনুপ্রাণিত করবে।
উপদেষ্টা, ময়মনসিংহ বন্ধুসভা