নোয়াখালী বন্ধুসভার রজতজয়ন্তী উৎসব

২৬ বছরে পা দিয়েছে নোয়াখালী বন্ধুসভা
ছবি: বন্ধুসভা

১১ নভেম্বর ছিল প্রথম আলো বন্ধুসভার রজতজয়ন্তী। একই সঙ্গে ছিল নোয়াখালী বন্ধুসভারও রজতজয়ন্তী। নানা ব্যতিব্যস্ততা ও ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে সময় পিছিয়ে ২৩ নভেম্বর জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসংলগ্ন মৌমাছি কচিকাঁচার মেলার ছাদে রজতজয়ন্তী উৎসব আয়োজন করে নোয়াখালী বন্ধুসভা।

আগের দিন থেকেই নানাভাবে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন বন্ধুরা। অনুষ্ঠানের দিন সকাল থেকেই একে একে বন্ধুরা সাজিয়ে তোলেন স্থানটি। সেজে ওঠে ‘বন্ধুদের প্রত্যয়, হারবে না বাংলাদেশ; আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’—এর মতো স্লোগানের হাতে লেখা পোস্টারে। সব প্রস্তুতি শেষে বেলা তিনটায় শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান।

একে একে নবীন-প্রবীণ, নতুন-পুরোনো বন্ধুরা উপস্থিত হতে শুরু করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সহসভাপতি জাহিদ হাসান ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সুলতানা। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ হোসেন। উপদেষ্টা মাহফুজের রহমান বলেন, ‘বন্ধুসভা আমার অন্য রকম এক তৃপ্তির জায়গা। এখানে তরুণেরা যেভাবে সমাজ ও দেশের উন্নয়নে কাজ করে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ওদের (নোয়াখালী বন্ধুসভার বন্ধুরা) সঙ্গে কাজ করে নিজেকেও তরুণ মনে হয়।’ বক্তব্যের শেষ দিকে তিনি এ বছর বন্ধুদের বৃক্ষরোপণ নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করার জন্যও প্রশংসা করেন।

উপদেষ্টা আব্দুর রহিম সোহেল বলেন, ‘মানুষ নানা সময় বিভিন্ন অভ্যাসে ও ভালো লাগায় আটকায়। আর আমি আটকে গেছি এই নোয়াখালী বন্ধুসভায়।’ প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকের বন্ধু জুনায়েদ আহমেদ বলেন, ‘সেই প্রথম যখন আমরা বন্ধুসভা শুরু করি, তখনো একসঙ্গে এভাবে জড়ো হতাম নানা আয়োজনে। নানা কাজে বই নিয়ে জমে উঠত আমাদের আড্ডা। সে ধারা এখনো চলমান দেখে সত্যিই বেশ ভালো লাগছে।’ এরপর একে একে আরও বক্তব্য দেন উপদেষ্টা লায়লা পারভীন, সমাজকর্মী রওশন আক্তার ও ফারজানা মুন্নী।

নোয়াখালী বন্ধুসভার রজতজয়ন্তী উৎসব
ছবি: বন্ধুসভা

সাংস্কৃতিক পর্বে বন্ধুসভার থিম সংয়ের ছন্দে নৃত্য পরিবেশন করেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাজরিহাতুন স্বর্ণা। কবিতা আবৃত্তি করেন বন্ধু ওমর সানি। একক নৃত্য পরিবেশন করেন বন্ধু নাহিদা ইতু। গান পরিবেশন করেন বন্ধু ফাহমিদা জেরিন। একপর্যায়ে উপস্থিত বন্ধুদের জন্য ধাঁধা ছুড়ে দেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালকেরা। পরবর্তী সময় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়।

উৎসবে বেশ কয়েকজন নতুন বন্ধু উপস্থিত ছিলেন। তাঁদেরকে করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানান সবাই। নতুনদের মধ্যে অনুভূতি ব্যক্ত করেন ইয়ামিন আরাফাত, আনিশা আক্তার ও ফাতেমা আক্তার। এরপর এ বছর বর্ষসেরা বন্ধুসভা ও বৃক্ষরোপণে সেরা ১০ বন্ধুসভার একটি নির্বাচিত হওয়ায় অর্জিত স্মারক ও সনদ উপস্থাপন করা হয়। ১১ নভেম্বর ঢাকায় বন্ধুসভার রজতজয়ন্তী উৎসবে ২০২৩ সালের বৃক্ষরোপণে সেরা ১০ বন্ধুসভা ও বর্ষসেরা বন্ধুসভার নাম ঘোষণা করে জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ।

উৎসবকে প্রাণবন্ত করে তুলতে বল নিক্ষেপ খেলা আয়োজন করেন পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক তাজকির হোসেন, দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রহিম, বন্ধু শিহাব, হাসানসহ আরও কয়েকজন। খেলায় অংশ নেন উপদেষ্টা ও সিনিয়র বন্ধুরা। বিজয়ীদের পুরস্কারস্বরূপ চারাগাছ প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে হারমোনিয়াম ও তবলায় সুর তোলেন দুই বন্ধু সৌরভ ও তুর্য। সমাপনী বক্তব্যে উপদেষ্টা সুমন নুর সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, ‘আমরা সারা বছর একযোগে কাজ করেছি। সব উপদেষ্টা, বয়োজ্যেষ্ঠ, সিনিয়র সদস্যসহ বন্ধুদের প্রচেষ্টায় আমরা সেরা ১০–এ অবস্থান করতে পেরেছি। এই অর্জন আমাদের অনুপ্রেরণা দেয় আগামীতে আরও ভালো ভালো কাজ করার জন্য। আমাদের এই ধারা বন্ধুরা সবাই অব্যাহত রাখবেন।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বইমেলা সম্পাদক আশরাফুল মতিন, অর্থ সম্পাদক উম্মে ফারহিন, বন্ধু শিহাব, নাফিস, আনিশা, বিপ্লব, নাফিস, মিজবাহ, শাহরিয়ার সৈকত, শান, আবিদ, নিশাতসহ আরও অনেকে।

পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা