‘আমাদের মায়ের ভাষা মাতৃভাষাকে মর্যাদাশীল করতে বিশ্বদরবারে পৌঁছাতে সবাইকে ভাষার প্রতি সচেতন এবং যত্নশীল হতে হবে। আঞ্চলিকতার পাশাপাশি শুদ্ধ ভাষার সঠিক প্রয়োগ করতে হবে।’
নোয়াখালী বন্ধুসভার বর্ণমালা উৎসবে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এ কথাগুলো বলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাসুদুর রহমান। ২২ ফেব্রুয়ারি মাইজদী বালিকা বিদ্যানিকেতন স্কুলে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সহযোগিতায় ছিল আল-আমিন ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও জাতীয় শহীদ দিবসে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। অংশ নেয় নোয়াখালী জেলা শহরের ১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা।
উৎসবের উদ্বোধন করেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক আবদুল কাইয়ুম মাসুদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মাইজদী বালিকা বিদ্যানিকেতন স্কুলের প্রধান শিক্ষক রোকেয়া সুলতানা। তিনি অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী ও আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শুভকামনা জানান। একই সঙ্গে ভাষাশহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
উৎসবে শিক্ষার্থীরা অপচনশীল দ্রব্য দিয়ে বাসা থেকে বিভিন্ন বর্ণ ও বর্ণ দিয়ে নান্দনিকভাবে শব্দ তৈরি করে আনে। এ ছাড়া বাংলা ভাষা ও ভাষা আন্দোলনের ওপর কুইজ প্রতিযোগিতা ও খোলা চিঠি লেখায় অংশগ্রহণ করে। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও মেধার ভিত্তিতে বিজয়ী নির্ধারণ করেন বিচারকেরা।
পরীক্ষা পর্ব শেষে শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। এই পর্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাসুদুর রহমান, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহবুবুর রহমান, এন লিটল স্টার কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক লায়লা পারভিন, নোয়াখালী জিলা স্কুলের সাবেক সহকারী শিক্ষক মাহফুজের রহমান, প্রভাতি শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক লায়লা তারেক, নারায়ণপুর আর কে উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক জামাল উদ্দিন, চর আমান উল্ল্যাহ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক কামাল হোসেন প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন নোয়াখালী বন্ধুসভার সভাপতি উম্মে ফারহিন।
শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল হতে হবে প্রত্যেক বিষয়ে।
শিক্ষার্থীরা তাদের ভাষা–সম্পর্কিত অজানা অনেক প্রশ্ন ছুড়ে দেয় বিচারকদের প্রতি। অতিথিরাও উত্তরের মাধ্যমে তাদের ভাষাবিষয়ক দ্বিধা দূর করেন। কেউ কেউ জিজ্ঞাসা করেন, বাংলা ভাষা কেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা? কেন ২১ ফেব্রুয়ারিতেই আমরা ভাষাশহীদদের স্মরণ করি? বিশ্বে ভাষা মর্যাদায় বাংলা ভাষার অবস্থান কততম? এমন নানা খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন করে।
নোয়াখালী জিলা স্কুলের সাবেক সহকারী শিক্ষক মাহফুজের রহমান বলেন, ‘সৃজনশীলতার বিকল্প কিছুই নেই। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল হতে হবে প্রত্যেক বিষয়ে। প্রতিনিয়ত প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের চর্চার ওপর রাখতে হবে। বর্তমান বিশ্বে নিজেকে আপডেট করতে হলে চর্চার বিকল্প নেই।’
আলোচনা শেষে বিজয়ী প্রতিযোগীদের হাতে মেডেল, সার্টিফিকেট ও বই তুলে দেওয়া হয়।
সাংগঠনিক সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা