ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রির কাজ জানলে পুরো পৃথিবীই কর্মক্ষেত্র

‘গ্রাফিক ডিজাইন ইন্ডাস্ট্রি, এর সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ে অতিথিদের প্যানেল আলোচনা
ছবি: শাকিব হাসান

একটা ছবি কখনো হাজার শব্দের চেয়ে বেশি কথা বলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটুকরা ভিজ্যুয়ালই পারে হাজারো মানুষের কাছে কোনো ভাবনা ছড়িয়ে দিতে। সেই ভিজ্যুয়ালের পেছনে থাকে পরিকল্পনা, ভাবনা ও নিখুঁত উপস্থাপনা; যার নাম গ্রাফিক ডিজাইন। গ্রাফিক ডিজাইন একধরনের যোগাযোগের ভাষা। ডিজাইন শেখা মানে এখন নিজেকে প্রকাশ করার, পৃথিবীর সঙ্গে কথা বলার নতুন উপায় শেখা।

এই উপলব্ধি থেকেই ‘গ্রাফিক ডিজাইন: কিক অব ফর বিগেনার্স’ শিরোনামে বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করেছে প্রথম আলো বন্ধুসভা। দেশী ফুডের সহযোগিতায় ১৮ অক্টোবর রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ের সভাকক্ষে দিনব্যাপী এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে নিবন্ধিত বন্ধুরা অংশ নেন।

শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক
ছবি: শাকিব হাসান

শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক বলেন, ‘বর্তমান সময়ে যে গ্রাফিক ডিজাইন জানবে, সে জয়লাভ করবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে পৃথিবী এখন ব্যক্তিমানুষের হয়ে গেছে। আগামী দিনে যে নিজেকে ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারবে, সে নেতৃত্ব দেবে।’

বন্ধুসভা জাতীয় পর্ষদের সভাপতি জাফর সাদিক বলেন, ‘এই কর্মশালা আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো, আপনারা যাতে নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারেন, আরও বেশি যোগ্য হয়ে উঠতে পারেন। গ্রাফিক ডিজাইন সম্পর্কে জানলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভুয়া সংবাদ ও চিত্র সম্পর্কেও আপনারা সচেতন হতে পারবেন।’

জাতীয় পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন মল্লিক বলেন, ‘আজ যা শিখবেন, সেগুলো বাসায় গিয়ে চর্চা করতে হবে। এই কর্মশালার পর হয়তো প্রো হবেন না, তবে একটা ধারণা পাবেন। যা ক্যারিয়ারে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।’

কর্মশালা পরিচালনা করেন শান্ত–মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির শিক্ষক ও ইন্ডাস্ট্রি প্রফেশনালস সামছুদ্দোহা সাফায়েত
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

কর্মশালা পরিচালনা করেন শান্ত–মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির শিক্ষক ও ইন্ডাস্ট্রি প্রফেশনালস সামছুদ্দোহা সাফায়েত। তিনি বলেন, ‘ভিজ্যুয়াল কনটেন্টের মাধ্যমে টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে বার্তা পৌঁছানোর একটি মাধ্যম গ্রাফিক ডিজাইন। এটি মূলত উপস্থাপনা। উপস্থাপনার মাধ্যমে অডিয়েন্সকে আকৃষ্ট করা। এর জন্য আইডিয়া বেশি জরুরি।’

‘ডিজাইনাররা মূলত ভিজ্যুয়ালি মার্কেটিংয়ের কাজ করেন। পণ্য, মূল্য, স্থান ও প্রচার—মার্কেটিংয়ের এ চার খাতেই গ্রাফিকসের কাজ রয়েছে,’ যোগ করেন সামছুদ্দোহা সাফায়েত। অ্যাডোব ফটোশপ ও অ্যাডোব ইলাস্ট্রেটর সফটওয়্যারের প্রাথমিক টুলস সম্পর্কেও অংশগ্রহণকারীদের জানান তিনি।

‘গ্রাফিক ডিজাইন ইন্ডাস্ট্রি, এর সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ে ছিল প্যানেল আলোচনা। সামছুদ্দোহা সাফায়েতের সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে ছিলেন শান্ত–মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির গ্রাফিক ডিজাইন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মো. সাইফুল ইসলাম, আর পি সাহা ইউনিভার্সিটির ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান তানজিল হাসনাইন মঈন ও ইন্ডাস্ট্রি প্রফেশনালস ও ভিজ্যুয়াল ডিজাইনার লায়লা নূর চৈতী।

কর্মশালা শেষে সনদ হাতে অংশগ্রহণকারীরা
ছবি: শাকিব হাসান

মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রি এমন একটি শিল্প, কাজ জানলে সারা পৃথিবীই আপনার কর্মক্ষেত্র। তাই সৃজনশীল হতে হবে, প্রচুর গবেষণা করতে হবে এবং ব্যতিক্রম কিছু চিন্তা করতে হবে।’

তানজিল হাসনাইন মঈন বলেন, ‘ফ্যাশন ও গ্রাফিক ডিজাইনের ক্ষেত্রে এই দেশে প্রচুর কাজ করার জায়গা রয়েছে। কিন্তু ভালো ডিজাইনার নেই। যার আইডিয়া যত ভালো, সে এই খাতে সফল হবেই।’

লায়লা নূর চৈতী বলেন, ‘কাজটাকে ভালোবাসতে হবে, সৃজনশীলতার চর্চা করতে হবে। বিভিন্ন টুলস সম্পর্কে সব সময় আপডেট থাকতে হবে।’

কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সনদ তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশী ফুড লিমিটেডের ব্র্যান্ড ম্যানেজার এ এইচ সি শেহজাদ ও ক্রিয়েটিভ ম্যানেজার এনামুল হক।