নব আনন্দে বৈশাখবরণ

অনুষ্ঠান শেষে বন্ধুসভার বন্ধুরা
ছবি: এসকে কাব্য

৫ বৈশাখ ১৪৩২, বাংলা নতুন বছরের পঞ্চম দিন। বৈশাখের গরম আবহাওয়ার বদলে দিনটি শীতল, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। যদিও বৃষ্টি হয়নি। এমনই পরিবেশে বেলা ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের আর সি মজুমদার মিলনায়তন প্রাঙ্গণে জড়ো হতে শুরু করেন বন্ধুসভার বন্ধুরা। সবার মধ্যে বৈশাখী আমেজ। ছেলেদের গায়ে পাঞ্জাবি ও মেয়েরা পরিধান করেন শাড়ি। প্রথম আলো বন্ধুসভার আয়োজনে ‘বৈশাখবরণ’ অনুষ্ঠানে আসেন তাঁরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন বন্ধু স্টল সাজিয়ে বসেন। স্টলে ছিল বাতাসা, মোয়া, নাড়ুসহ বাহারি রকমের শুকনা খাবার; মেয়েদের সাজসজ্জার চুড়ি, গহনাসহ নানা কিছু; বইয়ের স্টলও ছিল একটি। একই সময়ে মিলনায়তন প্রাঙ্গণের খোলা স্থানে শুরু হয় পিলো পাসিং খেলা। ছেলে–মেয়ে সবাই এতে অংশ নেন। এই খেলা শেষ হতেই শুরু হয় ছেলেদের মোরগলড়াই। যেখানে প্রতিযোগিতা নয়, বরং আনন্দ করাটাই আসল উদ্দেশ্য। এরপর অনুষ্ঠিত হয় বল নিক্ষেপ খেলা।

মোরগলড়াই খেলা
ছবি: এসকে কাব্য

খেলা শেষ হতে হতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার উপক্রম। সবাই চলে যান মিলনায়তনে। শুরু হয় সাংস্কৃতিক পর্ব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার বন্ধু ইফাদ হাসান ও ইশিতা জাহানের প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় এই পর্ব। কবিতা আবৃত্তি এবং গান ও নৃত্য পরিবেশনায় মিলনায়তন মাতিয়ে রাখেন ঢাকা মহানগর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও সাভার বন্ধুসভার বন্ধুরা।

ফাঁকে ফাঁকে চলে শুভেচ্ছা বিনিময় পর্ব। জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের উপদেষ্টা তাওহীদা জাহান শান্তা বলেন, ‘ঢাবি যেমন আমার ভালোবাসার জায়গা, বন্ধুসভাও তেমনই ভালোবাসার জায়গা।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার বন্ধুদের গান পরিবেশনা
ছবি: এসকে কাব্য

সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের উপদেষ্টা মুমিত আল রশিদ বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে, অবিচারের বিরুদ্ধে আমরা বন্ধুসভার বন্ধুরা সব সময় সোচ্চার হয়েছি। আমরা যখন একসঙ্গে দাঁড়াই, আমরা কখনো হারিনি। প্রথম আলো যে আলোর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে, সাম্যের ভিত্তিতে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চায়, সেই চেতনা বন্ধুসভার বন্ধুদেরও ধারণ করতে হবে।’

জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন মল্লিক চমৎকার আয়োজনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভাকে ধন্যবাদ জানান।

বন্ধুত্ব কখনো শেষ হয় না জানিয়ে জাতীয় পর্ষদের সহসভাপতি মাহবুব পারভেজ বলেন, ‘এখানে এসে ভালো লাগছে। যাঁদের মনে দুঃখ ছিল, তাঁদের সব দুঃখ নতুন বছরে দূর হয়ে যাক। সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা।’ এ সময় তিনি কবি হেলাল হাফিজের একটি কবিতা আবৃত্তি করেন।

ড্যাফোডিল বন্ধুসভার এক বন্ধুর নৃত্য পরিবেশনা
ছবি: এসকে কাব্য

ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার সভাপতি মাহমুদা মুহসিনা বুশরা বলেন, ‘যে অনুষ্ঠানই হোক, আমরা সবাই একসঙ্গে হই। এটা আমাদের মিলনমেলা। একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। মানুষে মানুষে সম্পর্ক বাড়াতে হবে।’

আয়োজন সহযোগী হিসেবে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা। সাংস্কৃতিক পর্ব শেষে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এই পর্ব সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক আনমুন জেসমিন।

সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর বন্ধুসভা