উচ্ছ্বাসে-আনন্দে শুদ্ধ সংস্কৃতির বার্তা

নৃত্য পরিবেশনা, দেশাত্মবোধক গান, লোকসংগীত, ব্যান্ড সংগীত, মূকাভিনয় প্রদর্শনীসহ মনোমুগ্ধকর সব আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্‌যাপিত হয়েছে প্রথম আলো বন্ধুসভার ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১১ নভেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

বেলা আড়াইটায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে মূল পর্ব শুরু হয়। পরিবেশনায় অংশ নেন বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের হৃদয় সৈকত, পৌলমি অদিতি, ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার অনিক সরকার, মেঘা খেতান ও তাপসী রায়। এরপরই বন্ধুসভার থিম সংগীতের ছন্দে নৃত্য পরিবেশন করেন জাকিয়া লিমার নেতৃত্বে ড্যাফোডিল বন্ধুসভার একদল বন্ধু।

আলোচনা পর্বের ফাঁকে ফাঁকে চলতে থাকে বন্ধুদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ‘মুক্তির মন্দিরও সোপান তলে’ গানে মুগ্ধতা ছড়ান হৃদয় সৈকত ও পৌলমি অদিতি। তাঁদের জাদুকরি সুরের মোহনায় উপস্থিত দর্শকেরাও কণ্ঠ মেলান। সৃষ্টি হয় এক অন্য রকম পরিবেশ।

‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ গানের ছন্দে নৃত্যে মঞ্চ মাতিয়ে তোলেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি বন্ধুসভার একদল বন্ধু। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার বন্ধুরা গেয়ে শোনান ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’ গান।

নবারুণ ভট্টাচার্যের কবিতা ‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না’ আবৃত্তি করেন জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সহসভাপতি মাহবুব পারভেজ। সাংস্কৃতিক পর্বের সঞ্চালনাও তিনি করেন।

অনুষ্ঠানে আরও ছিল ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার বন্ধুদের পরিবেশনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নিয়ে একটি মূকাভিনয় প্রদর্শনী। সাফিন উজ জামানের রচনা ও নির্দেশনায় এতে অভিনয় করেন শারমিন আরা তিশা, মেঘা খেতান, ওয়াসিমা তাসনিম, আশফাকুর রহমান ও খাদিজা জান্নাত।

দেশাত্মবোধক গান ও নৃত্য পরিবেশনায় বন্ধুদের মুগ্ধতা শেষ হওয়ার আগেই লোকসংগীতের মূর্ছনা ছড়ান ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার অনিক সরকার ও মেঘা খেতান। তাঁদের সুরের জাদুতে মিলনায়তন যেন উৎসবস্থলে পরিণত হয়।

সবশেষে ছিল ব্যান্ড সংগীত। শুরুতেই মঞ্চে আসে নকশিকাঁথা। নদী বাঁচানোর একটি গান দিয়ে তাদের পারফরম্যান্স শুরু হয়। একে একে আরও তিনটি গান গেয়ে শোনায় তারা।

তরুণ ব্যান্ড তিনটি গান পরিবেশন করে। দলটির ভোকালিস্ট তরুণ মুন্সি বলেন, ‘বন্ধুসভায় আমরা তরুণ আসছি। এটাই তরুণের জন্য আনন্দের।’

‘লেফট রাইট’ গান দিয়ে পরিবেশনা শুরু করে বাংলা ফাইভ ব্যান্ড। একে একে ব্যান্ডটি গেয়ে শোনায় ‘রক্ত’, ‘আমি ছুটে যাই’, ‘বাবা-মায়ের পকেটে টাকা থাকে না, থাকে মান-সম্মান’ও সবার শেষে ‘কনফিউশন’ গান।

অনুষ্ঠান যখন শেষ হয়, তখন এক বন্ধু বলছিলেন, একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো আয়োজন উপভোগ করেছেন। কেউ কেউ ঢাকার বাইরে থেকে এসেছেন। বাড়ি ফেরার তাড়া থাকায় ইচ্ছা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেননি। যাওয়ার আগে বলে যান, প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছেন।