ভৈরব বন্ধুসভার তিন পর্বের ‘কবিতা আড্ডা’

কবিতা আড্ডায় উপস্থিত বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

কবিতাচর্চায় নব্বইয়ের দশক ছিল ভৈরবের সোনালি সময়। পরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কারও কারও মধ্যে চর্চাটি চলমান থাকলেও সাংগঠনিক কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে তেমন প্রচলন নেই। ছোট্ট এ শহরটিতে কবিতা যেন দুর্লভ কিছু। সেই হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কবিতা নিয়ে ভৈরব বন্ধুসভা আয়োজন করেছে তিন পর্বের ‘কবিতা আড্ডা’। উদ্দেশ্য মানুষের মধ্যে আবারও কবিতার চর্চা বাড়িয়ে তোলা। সেটি এরই মধ্যে হাজারো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে ভৈরব বন্ধুসভা।

কবিতা নিয়ে তিন পর্বের আয়োজনের সমাপনী দিনে গুণী আবৃত্তিকারেরা এমনই মূল্যায়ন করেন। সমাপনী পর্বটি শুরু হয় ২২ জুলাই রাত ৮টায়। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় যুক্ত হন কবিতা নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করা ভৈরবের সাতজন গুণী সংগঠক ও আবৃত্তিকার। তাঁরা হলেন—ভৈরব আবৃত্তি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক সাজেদা বাসেত, স্পর্শ আবৃত্তি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ, আবৃত্তিকার ও সংগঠক তাসিন উদ্দিন, আহমেদ হাদী, সাফিয়া খাতুন, নূর-ই লাইলা, লুবনা হক ও ফারহানা বেগম।

কবিতা আবৃতি করছেন এক বন্ধু, মনোযোগ দিয়ে শুনছেন বাকিরা
ছবি: বন্ধুসভা

সমাপনী পর্বের আড্ডায় উঠে আসে কবিতাচর্চায় ভৈরবের সোনালি অতীতের নানা ইতিবাচক দিক। একই সঙ্গে আলোচনায় প্রাধান্য পায় বর্তমানের দৈন্য। প্রত্যেকে জীবন গঠনে কবিতাচর্চার প্রয়োজনীতার তাগিদ অনুভব করেন। ভৈরবে কী করে কবিতাচর্চার সুযোগ সৃষ্টি করা যায়, এ নিয়েও নানা প্রস্তাব উঠে আসে।

ভৈরব বন্ধুসভা বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে থাকে। এ কথা সত্য, নানা আয়োজনের মধ্যে কবিতা যেন কিছুটা অবহেলিত হয়ে থাকছে। এবার কবিতা নিয়ে কাজ করার তাগিদ ছিল বছরের প্রথম দিন থেকেই। শেষে ‘কবিতা আড্ডা’ নামে আয়োজনটির প্রথম পর্ব হয় ৪ জুলাই। প্রথম পর্বে ভৈরব বন্ধুসভার উপদেষ্টা নূর-ই লাইলা ‘চন্দ্রাবিলাসী নারী’ কবিতাটি আবৃত্তি করে আড্ডার সূচনা করেন। কবিতাটি কবি মাকিদ হায়দারের লেখা।

কবিতা আড্ডায় নারী বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

ওই পর্বে ভৈরবে কবিতাচর্চা নিয়ে আড্ডার মধ্য দিয়ে আবৃত্তিকারেরা আটটি কবিতা পড়ে শোনান। দ্বিতীয় পর্বটি হয় ৮ জুলাই। বন্ধুসভার উপদেষ্টা লুবনা হক পড়েন নিরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘অমলকান্তি’ কবিতাটি। তাঁর এই আবৃত্তির মধ্য দিয়ে সূচনা হয় দ্বিতীয় পর্বের কবিতা আড্ডা। দুটি পর্ব ভৈরব বন্ধুসভার ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ সম্প্রচার হয়। সম্প্রচার দুটি গড়ে ৭ হাজার ২০০ মানুষ দেখেছেন। দুই পর্বের সাফল্যের পর সিদ্ধান্ত হয়, শেষ পর্বটি হবে ভৈরবের গুণী আবৃত্তিকারদের উপস্থিতিতে। সেটিও লাইভ সম্প্রচার হয়। তিনটি পর্ব অনুষ্ঠিত হয় প্রথম আলো ভৈরব কার্যালয়ে।

প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে আবৃত্তি করেন ভৈরব বন্ধুসভার নয়ন আহমেদ, মহিমা মেধা, সেলিম রেজা, নুদরাতুন তোরসা, আফরা জামান ও অর্ণব সাহা। বিভিন্ন পর্বে সঞ্চালনায় অংশ নেন প্রিয়াংকা ও নুদরাতুন তোরসা। আড্ডায় সঙ্গ দেন উপদেষ্টা সুমন মোল্লা, সভাপতি সুমাইয়া হামিদ, সাধারণ সম্পাদক সিদরাতুল রশিদ। কবিতা আড্ডা আয়োজনের সদস্যসচিব ছিলেন রাসেল রাজ।

বন্ধু, ভৈরব বন্ধুসভা