প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের মুক্তি ও হেনস্তার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ১৯ মে বুধবার বিকেলে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে প্রথম আলো বন্ধুসভা। এ সময় জেলার বিভিন্ন নাগরিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা কর্মসূচির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণ দাবি করেন।
প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলো কক্সবাজারের নিজস্ব প্রতিবেদক আব্দুল কুদ্দুস।
আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গত সোমবার বেলা তিনটায় সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। এরপর তাঁকে একটি কক্ষে প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়। এ সময় তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। লুটিয়ে পড়েন মেঝেতে, কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তাঁর তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়নি। রাত সাড়ে আটটার পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় শাহবাগ থানায়। সেখানে প্রায় ১১ ঘণ্টা পুলিশি হেফাজতে ছিলেন রোজিনা ইসলাম। এর মধ্যেই থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা দেওয়া হয়। ঘটনার টানা ২৩ ঘণ্টা পর একজন খ্যাতিমান নারী সাংবাদিককে কারাগারে পাঠানো অমানবিক ঘটনা এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন। আমরা রোজিনা ইসলামের দ্রুত মুক্তি এবং হেনস্তার ঘটনায় জড়িত দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছি। সারা বাংলাদেশের মানুষ আজ রোজিনা ইসলামের পক্ষে সোচ্চার-ঐক্যবদ্ধ। জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবি জানানো হচ্ছে।’
কক্সবাজার পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধূরী বলেন, ‘সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ঘাপটি মেরে থাকা একটি দুর্নীতিবাজ চক্র পরিকল্পিতভাবে রোজিনা ইসলামের হেনস্তার ঘটনাটি ঘটিয়েছে। উদ্দেশ্য, সাংবাদিকদের খেপিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা। আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিবের দ্রুত অপসারণ চাই।’
কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন, তা বাধাগ্রস্ত করতে এবং সরকারকে বিপদে ফেলতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজ চক্রটি রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও শারীরিক নির্যাতন করেছে। হেনস্তার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে এবং তাঁদের অবৈধ সম্পদের হিসাব জনগণকে জানাতে হবে।
সমাবেশে বক্তব্য দেন কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল, কক্সবাজার রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি এইচ এম নজরুল ইসলাম, কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদ সভাপতি দীপক শর্মা দীপু, কক্সবাজার ইলেকট্রনিক জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আহসান সুমন, কক্সবাজার টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক ইমরুল কায়েস চৌধুরী, শিক্ষক আরিফুর রহমান, সামাজ উন্নয়ন কর্মকর্তা কায়সার হামিদ, প্রথম আলো বন্ধুসভার উপদেষ্টা ইব্রাহিম প্রমুখ।