লেকের পাড়ে পিঠা উৎসব

টেবিলে সাজানো হয়েছে হরেক রকমের পিঠা
ছবি: সংগৃহীত

সময়টা মাঘ মাসের বিকেল। দুই পাশে পাহাড়, মাঝখানে লেক। বিকেলের সূর্য তখন হেলে পড়ছে পাহাড়ের কোলে। পাহাড়ের পাশ ঘেঁষেই ছোট্ট একটা মাঠ। মাঠের এক পাশে টেবিলে সাজানো হয়েছে হরেক রকমের পিঠা। টেবিলের কিছুটা দূরে তাকালেই চোখ যায় ব্যানারের দিকে। সেখানে লেখা, ‘সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে পিঠা উৎসব, আয়োজনে চট্টগ্রাম বন্ধুসভা।’ প্রকৃতির এমন সান্নিধ্যে চেয়ার নিয়ে মাঠের মাঝখানে বসে আছে শিশুরা। এমন দৃশ্যের দেখা মেলে ১৬ জানুয়ারি চট্টগ্রামের বায়েজিদ-ভাটিয়ারি সংযোগ সড়কের লেকের পাড় এলাকায়।

বিকেল চারটায় হিমেল বাতাসও যেন জানান দিচ্ছিল মাঘের শীতের কথা। সেই বাতাসে পিঠার ম-ম গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছিল আশপাশে। ২৫ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশু অংশ নেয় এই পিঠা উৎসবে। পিঠা উৎসবের প্রথমেই জন্মদিনের বড় দুটি কেক কাটে শিশুরা। কেক কাটার সময় শিশুদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।

কেক কাটা শেষে শুরু হয় পিঠা খাওয়ার উৎসব। ভাপা, পাটিসাপটা, ঝিনুক, চিতই, ছাঁচ, ঝালপুলি পিঠা ও কেকসহ মোট আট রকমের পদ কলাপাতায় করে খেতে দেওয়া হয় সবাইকে। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশাপাশি শীতের পিঠার স্বাদ নেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার উপস্থিত বন্ধুরাও। এ আয়োজনের সমন্বয়কারী ছিলেন ফয়সাল হাওলাদার, মাসুদ রানা ও এ আর আসাদ।

পিঠা উৎসবের প্রথমেই জন্মদিনের বড় দুটি কেক কাটে শিশুরা
ছবি: সংগৃহীত

চমক ছিল পিঠা খাওয়ার পরও। খাওয়া শেষে নিজেদের মতো করে আনন্দে মেতে ওঠে শিশুরা। কেউ কেউ অংশ নেয় নানা রকম খেলায়। কেউবা আবার নিজেদের মধ্যে খুনসুটিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সব মিলিয়ে সেই বিকেলে প্রাণের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছিল লেক পাড়জুড়ে।

পেশায় রিকশাচালক বাবা আর গৃহকর্মী মায়ের আট বছরের সন্তান জান্নাতী এসেছিল উৎসবে। আয়োজনে অংশ নিয়ে শীতের পিঠা খেতে পেরে ভালো লাগার কথা জানায় সে। জান্নাতীর মতো উপস্থিত ২৫ শিশুই প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে পিঠা খাওয়ার আনন্দে মেতে ছিল। বিদায়বেলায় শিশুরা একসঙ্গে বলে ওঠে, ‘ধন্যবাদ আপনাদের, আবার দেখা হবে।’

টেবিলে সাজানো হয়েছে হরেক রকমের পিঠা
ছবি: সংগৃহীত