জয়নাব (৪০) ছাত্রাবাসে রান্না করতেন। ৫ বছর আগে তাঁর স্বামী ব্রেন স্ট্রোকে প্যারালাইজড হয়ে শয্যাশায়ী। একটি মাত্র সন্তান তাঁদের। ইনকাম করার মতো পরিবারে আর কেউ নেই। করোনা মহামারির কারণে সব ছাত্রাবাস বন্ধ থাকায় রোজগার বন্ধ। জয়নাব দিনমজুর হিসেবে পরিবারের প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। নতুন করে আবার লকডাউন শুরু হলে জয়নাবের আয়–রোজগারের সুযোগ কমে যায়। ধারদেনায় সংসার চলছে। জয়নাবের পরিবারকে ঈদের বাজার করে দিয়েছেন মাগুরা বন্ধুসভার বন্ধুরা। বন্ধুদের কাছ থেকে এ উপহার পেয়ে খুশিতে আত্মহারা জয়নাব জানান, সামনে ঈদ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। এই বাজার পেয়ে তাঁর ছোট্ট সন্তানকে ঈদের সেমাই খাওয়াতে পারবেন।
মাগুরা প্রথম আলো বন্ধুসভার উদ্যোগে জয়নাবের মতো ৪২টি শ্রমজীবী পরিবারকে সহযোগিতা করা হয়েছে। ১২ মে বুধবার দুপুরে বন্ধুসভার বন্ধুরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঈদবাজার দিয়ে আসেন। ঈদবাজারের মধ্যে ছিল সেমাই, পোলাওয়ের চাল, ডাল, তেল, লবণ, গুঁড়া দুধ, সাবান, গরমমসলা, আলু ও পেঁয়াজ। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেটগুলো সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে পৌঁছে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা।
মাগুরা বন্ধুসভার বন্ধু আজাদের কাছ থেকে ঈদবাজার পেয়ে দিনমজুর সামাদ হাত ধরে দোয়া করেন। সামাদ বলেন, তাঁর পরিবারের জন্য এই বাজারে খুবই উপকার হয়েছে। তিনি লকডাউনের জন্য ঠিকমতো কাজ পাচ্ছিলেন না৷
জয়নাব ও সামাদের মতো শহরের আশপাশের এমন ৪০টি পরিবার ঈদবাজার পেয়ে নিজেদের আনন্দ প্রকাশ করে। অনেকে বলেন, পরবর্তী এমন কোনো কিছু হলে তাঁদের যেন আবার সহযোগিতা করা হয়। কেউ কেউ তাঁদের কাজ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
মাগুরা বন্ধুসভার ঈদবাজার বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আবদুল ওয়াদুদ, সভাপতি সাবিনা খাতুন, সাধারণ সম্পাদক সোহেল সিদ্দিকী মিঠু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবিহা মাহাবুব লিজাসহ বন্ধুসভার অন্য সদস্যরা।