কেউ খোঁজ নেয় না, তোমরা আইছ আল্লাহ মঙ্গল করুক

ত্রাণের প্যাকেট বন্যার্তদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে
ছবি: বন্ধুসভা

রিকশা চালিয়ে সংসার চালান বৃদ্ধ রহিম মিয়া। প্রতিদিনের রোজগারে যা হয়, তা দিয়েই চাল-ডাল কিনে স্ত্রী–সন্তানদের মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দেন। এভাবেই চলছিল রহিম মিয়ার টানাপোড়েনের সংসার। পাঁচ মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে ছোট্ট একটি কুঁড়েঘরে বাস করেন। বন্যার পানিতে তাঁর ঘর তলিয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
বিধবা ছালেহা খাতুন। স্বামী মারা গেছেন বছর পাঁচেক আগে। ভিক্ষা করে সংসার চালান। বন্যায় ছালেহা খাতুনের ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ, নেই থাকার জায়গা। কোনোমতে দিনাতিপাত করছেন সাত দিন ধরে।

খাদ্য সহায়তা নিচ্ছেন বানভাসী এক ব্যক্তি
ছবি: বন্ধুসভা

কিশোরগঞ্জ বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজ মারুফ হাওরে গিয়ে রহিম মিয়া ও বিধবা ছালেহা খাতুনের মতো সর্বস্বান্ত মানুষের তালিকা তৈরি করে আনেন। সেই মোতাবেক ২৭ জুন বন্ধুসভার বন্ধুরা তাঁদের হাতে ত্রাণের প্যাকেট তুলে দিয়ে আসেন। খুশি হয়ে ছালেহা খাতুন বলেন, ‘বাপ রে, বন্যায় আমরার সব ভায়াইয়া লইয়া গেছে। কেউ খোঁজ নেয় না। তোমরা আইছ। আল্লাহ তোমাদের মঙ্গল করুক।’

খাদ্যসামগ্রী পেয়ে শিশু দুইটির উচ্ছ্বাস
ছবি: বন্ধুসভা

একইভাবে রহিম মিয়াসহ করিমগঞ্জ উপজেলার নেয়ামতপুর ইউনিয়নের ধলিয়ারকান্দা, আঙ্গরকান্দা, বাহিরচর, গুনারবাড়ি ও ইটনা উপজেলার চৌগাঙ্গা ইউনিয়নের চন্দ্রপুর, নোয়াবাড়িসহ শতাধিক পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট বিতরণ করা হয়। প্রতিটি প্যাকেটে ছিল ২ কেজি চিড়া, এক কেজি চিনি, এক কেজি গুড়, এক প্যাকেট সেমাই, এক কেজি মুড়ি, এক প্যাকেট বিস্কুটসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধ।

বিতরণকালে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন পারভেজ মিয়া, হুমায়ুন মিয়া, সাইফুল ইসলাম, লুৎফুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান রঞ্জন প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি তাফসিলুল আজিজ, কিশোরগঞ্জ বন্ধুসভার সভাপতি লুৎফুন্নেছা চিনু, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজ মারুফ, সহসভাপতি আশিক, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক তানভীর হাসান, দুর্যোগ ও ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক উজ্জ্বল, মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য মাইশা, উৎসর্গসহ আরও অনেকে।

লেখা: কার্যনির্বাহী সদস্য, কিশোরগঞ্জ বন্ধুসভা