ভাষাশহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন

ফরিদপুর বন্ধুসভার উদ্যোগে ভাষাশহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালনছবি: বন্ধুসভা

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালির আত্মানুসন্ধানের দিন। এই দিন আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য রক্ত দিয়েছিলাম। ওই দিনই আমরা বুঝে গিয়েছিলাম ১৯৪৭ সালে আমাদের স্বাধীনতার যে স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল, তা ভুয়া। বায়ান্নর পথ ধরে এসেছে একাত্তর। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে আমরা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করি। তাই প্রতিবছর একুশ আমাদের পথ চিনিয়ে যায়, পথ দেখিয়ে দেয়। আমরা যদি বিভ্রান্ত হই, একুশের চেতনা আমাদের সুপথে নিয়ে আসে। এ জন্য বলা হয় একুশ মানে মাথা নত না করা।

২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচিতে এ কথা বলেন বক্তারা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ফরিদপুর বন্ধুসভার উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। একুশের অমর শহীদদের স্মরণে চার বছর ধরে মোমবাতি প্রজ্বালন করে আসছেন বন্ধুরা।

বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বন্ধুরা শহীদ বেদিতে মোমবাতি স্থাপন করেন। এরপর অপেক্ষার পালা। কখন সূর্য পাটে নামবে, কখন আসবে সন্ধ্যা। উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর বন্ধুসভার উপদেষ্টা প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক প্রবীর কান্তি বালা, ফরিদপুরে প্রথম আলোর আলোকচিত্রী মো. আলিমুজ্জামান, বন্ধু মানিক কুন্ডু, শুভ কুমার বিশ্বাস, সজীব পাল, প্রান্ত ঘোষ ও প্রণব বিশ্বাস।

সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধুরা মোমবাতি প্রজ্বালন শুরু করেন। মোমবাতির আলো দিয়ে অঙ্কে ৫২, ২১, বাংলা বর্ণ ‘দ’ ‘ক’ ‘ই’ ‘আ’ লেখা হয়।

সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শহীদ মিনার চত্বরটি স্টিলের পাত দিয়ে ঘেরা। প্রবেশের জন্য রয়েছে পথ। ঢুকতে না পেরে ওই প্রাঙ্গণে উপস্থিত দর্শনার্থীরা ভিড় জমান রেলিং দিয়ে ঘেরা শহীদ বেদির বাইরে। একসময় খুলে দেওয়া হয় শহীদ বেদিতে ঢোকার পথ। তখন বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীরা বেদিতে ঢুকে পড়েন। প্রত্যেকের হাতে তুলে দেওয়া হয় মোমবাতি। হাজারো মোমবাতি প্রজ্বালনে তাঁরা উৎসাহের সঙ্গে যোগ দেন।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ফরিদপুর বন্ধুসভা