শৈশব, সংগ্রাম ও জীবনের অনন্তপথের আহ্বান ‘পথের পাঁচালী’

শাবিপ্রবি বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসরছবি: বন্ধুসভা

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বাংলার এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবার—হরিহর রায়, তার স্ত্রী সর্বজয়া এবং তাদের দুই সন্তান দুর্গা ও অপু। উপন্যাসটি মূলত অপু ও দুর্গার বেড়ে ওঠা, তাদের শৈশবের চঞ্চলতা, দারিদ্র্যের কশাঘাত এবং নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের প্রকৃতির সঙ্গে তাদের নিবিড় সম্পর্কের কাহিনি।

১২ নভেম্বর বিকেলে ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাস নিয়ে পাঠচক্র করেছে শাবিপ্রবি বন্ধুসভা। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন টিলারগাঁও নামক এলাকার একটি টিলায় এটি অনুষ্ঠিত হয়।

বন্ধু সাবিনা আক্তারের সঞ্চালনায় উপন্যাসটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক ইয়ারমিন আক্তার। তিনি বলেন, হরিহর একজন স্বপ্নবিলাসী ও দুর্বলচিত্তের মানুষ। ফলে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে সর্বজয়াকে সংসার চালাতে হয়। সমস্ত অভাব-অনটনের মধ্যেও ভাই-বোন অপু ও দুর্গার প্রকৃতিঘেরা শৈশব ছিল নির্মল আনন্দে ভরা। আম-আঁটির ভেঁপু বাজিয়ে খেলা, নিশ্চিন্দিপুরের বাঁশবন, আমবাগান ও রেললাইন দেখার কৌতূহল তাদের জীবনকে মাধুর্য দিয়েছে।

হরিহরের দূরসম্পর্কের বৃদ্ধা পিসি ইন্দিরা ঠাকরুণ ছিলেন পরিবারের আরেক সদস্য। সর্বজয়ার রূঢ় আচরণ এবং দারিদ্র্যের কারণে তাকে চরম দুঃখ ও লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয় এবং একসময় তাকে ঘর ছাড়তে হয়। উপন্যাসের মর্মান্তিক মোড় আসে যখন অপু-দুর্গার চঞ্চল শৈশবের সঙ্গী দুর্গার মৃত্যু হয়। এরপর জীবিকা নির্বাহের আশায় হরিহর সপরিবার চিরদিনের জন্য নিশ্চিন্দিপুর গ্রাম ছেড়ে কাশীর (বারাণসী) উদ্দেশে রওনা হয়। তাদের এই যাত্রা যেন এক অনন্তপথের আহ্বানে সাড়া দেওয়া।

পাঠচক্রের আসরে উপস্থিত ছিলেন বন্ধু ইয়ারমিন আক্তার, সুমি আক্তার, জনি জান্নাত, সাবিনা আক্তার, মৃদুল রাজবংশী, মোস্তাকিম বিল্লাহ, তৌহিদুল ইসলামসহ অন্য বন্ধুরা।