শিশুদের মুখে হাসি এনে দিতে পারাটাই বন্ধুদের অর্জন

ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার সহমর্মিতার ঈদ
ছবি: এস কে কাব্য

রাজধানীর পশ্চিম ধানমন্ডির শংকরে বালুর মাঠ নামে পরিচিত বস্তিতে ঘিঞ্জি পরিবেশে বাস করে শতাধিক পরিবার। আর এই পরিবারগুলোতে সব মিলিয়ে শতাধিক শিশুর বাস। ৩১ মার্চ বস্তিতে থাকা ১৩০টি পরিবার ও ১১০টি শিশুর জন্য ঈদ উপহার নিয়ে হাজির হন ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার বন্ধুরা।

বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের আহ্বানে দেশব্যাপী ‘সহমর্মিতার ঈদ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ উপহার বিতরণ করা হয়। প্রতিটি শিশুর জন্য নতুন জামার পাশাপাশি তাদের পরিবারের জন্য দেওয়া হয় সেমাই, চিনি ও গুঁড়া দুধের প্যাকেট।

ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার ঈদের উপহার পেয়ে শিশুর মুখে হাসি
ছবি: এস কে কাব্য

উপহার হাতে পেয়ে সাত বছরের শিশু তাবাসসুম আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে। জামা হাতে নিয়ে তার ছোটাছুটিই বলে দেয়, কতটা খুশি হয়েছে সে। আরেক শিশু সাইফুল জানায়, তার বাবা একজন দিনমজুর। উপহার পেয়ে ঈদের দিন নতুন জামা পরা নিয়ে আর কোনো চিন্তা থাকল না।

ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার সভাপতি সাইদুল হাসান বলেন, ‘আজ ধানমন্ডি বালুর মাঠ বস্তিতে ১১০ শিশুর হাসিতে যেন ঈশ্বর নেমে এসেছিল। ঈদের রঙিন জামা পেয়ে তাদের সে কী উচ্ছ্বাস! প্রচণ্ড গরমে ১৩০টি পরিবারের হাতে ঈদের খাদ্যসামগ্রী তুলে দিতে পেরেও খুবই ভালো লাগছে। ভেতর পটে ঈদের আনন্দ অনুভব করছি। যে বন্ধুরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে, তাদের সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ।’

ক্যামেরা দেখে নিজের নতুন জামা দেখাচ্ছে এক শিশু
ছবি: এস কে কাব্য

সহসভাপতি মাহমুদা মুহসিনা বুশরা উপস্থিত ছিলেন পুরোটা সময়জুড়ে। তিনি বলেন, ‘চমৎকার একটি আয়োজন। ফুল–কুঁড়িদের সঙ্গে সুন্দর একটি সময় কাটল। নতুন জামা পাওয়ার পর তাদের মুখের হাসি দেখে বড়ই তৃপ্তি অনুভব করছি। ঈদ মানে খুশি। তাদের সঙ্গে ঈদের খুশির কিছুটা অংশ ভাগাভাগি করতে পেরে ভীষণ গর্ববোধ হচ্ছে।’

ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক নাঈমা সুলতানা বলেন, ‘বন্ধুসভা বরাবরই সহমর্মিতার ঈদ পালন করে থাকে। দেশব্যাপী এ আয়োজনের মাধ্যমে প্রান্তিক শিশু ও তাদের পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য।’

ঈদ উপহার দেওয়ার পাশাপাশি শিশুদের সঙ্গে আনন্দমুখর কিছু মুহূর্ত কাটান বন্ধুরা
ছবি: এস কে কাব্য

‘সহমর্মিতার ঈদ’ কর্মসূচির সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন অর্থ সম্পাদক অনিক সরকার ও দপ্তর সম্পাদক মেঘা খেতান। শিশুদের মুখে হাসি দেখে তাদের উচ্ছ্বাস ছিল আরও বেশি। অনিক সরকার বলেন, ‘এই বাচ্চাগুলোর মুখে হাসি ফোটানোর জন্য দিনরাত পরিশ্রম করেছি। তাদের মুখের হাসি আমাদের কাছে অনেক বড় পাওয়া। ভালো থাকুক এই শিশুগুলো, বেঁচে থাকুক তাদের স্বপ্নগুলো।’

ঈদ উপহার বিতরণ কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের ম্যাগাজিন সম্পাদক খায়রুন্নাহার খেয়া, ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার সহসভাপতি সাফিন উজ জামান, দপ্তর সম্পাদক মেঘা খেতান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শেখ কাব্য, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক ওয়াসিমা তাসনিম, জেন্ডার-সমতাবিষয়ক সম্পাদক শারমিন আরা তিশা, ম্যাগাজিন সম্পাদক আশফাকুর রহমান, বইমেলা সম্পাদক হামিদুল ইসলাম, বন্ধু রবিউল ইসলাম, আরিয়া আনজুমসহ অন্য বন্ধুরা।

সহসভাপতি, ঢাকা মহানগর বন্ধুসভা