এক প্রতিরোধযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে স্বাধীন করেছি। স্বাধীনতার জন্য অনেকেই জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁদের বেশির ভাগই স্বাধীনতার মিষ্টি সুবাস উপভোগ করে যেতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে একজন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থী রুমি। জাহানারা ইমামের লেখা একাত্তরের দিনগুলি বইয়ে বর্ণিত রয়েছে রুমি কীভাবে মুক্তিযুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দেন এবং যুদ্ধের সময়, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীরা ধরে নিয়ে যায়। পরে সে আর ফিরে আসেনি।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ২৮ মার্চ জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি নিয়ে পাঠচক্রের আসর করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা। উপস্থিত ছিলেন সভাপতি সুমাইয়া জামান, সাধারণ সম্পাদক অনুপ সরকার, পাঠচক্র ও পাঠাগার সম্পাদক আছিয়া শান্তা, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মৃদুল পাল, অর্থ সম্পাদক মেহেরাব রাফিদসহ অন্য বন্ধুরা।
বইটি পড়ে বন্ধুরা একাত্তরের মার্চ-ডিসেম্বর মাসের ঘটনা এবং বর্ণিত মাসগুলোর মধ্যে ১৬৮ দিনের ধারণা পেয়েছে। এই বর্ণিত দিনগুলোর মধ্যে ফুটে উঠেছে বাঙালির ক্ষোভ, আন্দোলন ও সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক মানুষের স্বাধীনতাযুদ্ধকে সমর্থন; মায়ের অভূতপূর্ব ভালোবাসা ও ভূমিকা, গেরিলাদের একের পর এক সাহসী অভিযান, হানাদার বাহিনীর নির্যাতন, অবরুদ্ধ ঢাকা নগরীর চিত্র ও উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক সাহায্যের চিত্র।
সাধারণ সম্পাদক অনুপ সরকার বলেন, ‘যাঁদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, তাঁদের ভুলে গেলে চলবে না। আমাদের প্রত্যকের উচিত তাঁদের ত্যাগে অর্জিত এই স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখার চেষ্টা করা।’
এ ছাড়া স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ‘আমার দৃষ্টিতে স্বাধীনতা’ শিরোনামে বিশেষ এক অনলাইন ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে ২৫ জন মানুষের থেকে তাদের দৃষ্টিতে স্বাধীনতা আসলে কী এবং কেমন, তা সবার মধ্যে তুলে ধরা হয়। এই ক্যাম্পেইনে সব বয়স এবং পেশার মানুষের অংশগ্রহণ ছিল।
সাবেক সভাপতি হাসান মাহমুদ সম্রাটের মতে, ‘স্বাধীনতা নিছক একটা শব্দ নয়। আমার দৃষ্টিতে স্বাধীনতা মানে ধর্মের বিভেদের পরিসমাপ্তি। স্বাধীনতা মানে যুদ্ধ নয়, শান্তির বাতাবরণ।’
সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন মুন্না বলেন, ‘পৃথিবীতে বাংলাভাষীদের জন্য বাংলাদেশ নাম দেশ সৃষ্টির ঘটনা চমকপ্রদ। ভাষা ও দেশের নামের চমৎকার মিতালি বিশ্বে বিরল। বহু রক্তে-সম্ভ্রমে-অশ্রুতে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। ফলে যথাযথ নাগরিক দায়িত্ব পালন, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এ দেশের স্বাধীনতাসংগ্রামকে সফল করতে পারে। আমার দৃষ্টিতে স্বাধীনতা মানে—‘এক লোকের পাশে অন্য লোক’ যাঁরা আঁকড়ে থাকবে, মমতায় থাকবেন।’
সভাপতি, জাবি বন্ধুসভা