এক সাধারণ মেয়ের অসাধারণ হওয়ার গল্প ‘সাতকাহন’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসরছবি: বন্ধুসভা

গরমে যেন স্বস্তি নেই কারোর। তাই বলে কি বন্ধুরা বই পড়া, আড্ডা থেকে বিরতি নেবে? না, মোটেই না। দাবদাহের মধ্যেও সবুজ পল্লবে মুখর গাছের ছায়ায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা আয়োজন করেছে পাঠচক্রের আসর। ২৪ এপ্রিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম ছায়ামঞ্চে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

পাঠচক্রের বিষয় ছিল সমরেশ মজুমদারের বিখ্যাত উপন্যাস ‘সাতকাহন’। বাংলা সাহিত্যের অবশ্যপাঠ্য উপন্যাসগুলোর তালিকা করলে এই বইয়ের নাম অবশ্যই যোগ করতে হয়। এটি শুধু একটি উপন্যাস নয়, এক নারীর জাগরণের গল্প। অনেকেই বইটিকে সমরেশ মজুমদারের লেখা মাস্টারপিস বলে অভিহিত করেন।

উপন্যাসটিতে বিংশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে পুরুষশাসিত সমাজে নারীর অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি প্রকাশ পেয়েছে নারীবাদী চেতনা। প্রোটাগনিস্ট দীপাবলি জলপাইগুড়ির চা–বাগানে বড় হওয়া এক কিশোরী; যার জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতের গল্প এই ‘সাতকাহন’। আপসহীন, সংগ্রামী এই নারী চরিত্র নিঃসন্দেহে সমরেশ মজুমদারের অন্যতম সেরা সৃষ্টি। পুরুষশাসিত সমাজের বিরুদ্ধে লড়াকু যোদ্ধার গল্প। যে গল্প হাজারো মেয়ের জীবনকে বাঁচতে শেখায়। শুধু বেঁচে থাকা নয়, নারীশিক্ষার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক।

পাঠচক্র শেষে জাবি বন্ধুসভার বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

এদিন পাঠচক্রের পাশাপাশি ছিল বন্ধুদের সঙ্গে ঈদ পুনর্মিলনী আড্ডা। ঈদের লম্বা ছুটি সবার কেমন কাটল এবং ঈদপরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন বন্ধুরা। উপস্থিত ছিলেন সভাপতি সুমাইয়া জামান, সাধারণ সম্পাদক অনুপ সরকার, পাঠচক্র ও পাঠাগার সম্পাদক আছিয়া শান্তা, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মৃদুল পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল সানিসহ অন্য বন্ধুরা।

সভাপতি সুমাইয়া জামান বলেন, ‘সাতকাহন’ একটি কালজয়ী উপন্যাস। যেখানে সমরেশ মজুমদার নারী জাগরণকে বেশ সাহসী ও সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। দীপাবলিকে যতই চেনা যায়, অবাক হতে হয়; কখনো তাকে মনে হয় অতি চেনা এক নারী। বিংশ শতাব্দীর নারীদের চিন্তা যে কতটা আধুনিক ছিল, তা এই উপন্যাস না পড়লে বুঝতে পারা সম্ভব নয়।

প্রচার সম্পাদক, জাবি বন্ধুসভা