‘কৃতী শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় প্রত্যয়’

সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট হাতে কৃতী শিক্ষার্থীরা
ছবি: বন্ধুসভা

একজন ভালো শিক্ষার্থী হিসেবেই নয়, ভালো মানুষ হয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। দেশের মধ্যে দশের একজন হয়ে কাজ করতে হবে। কারণ, আজকের মেধাবী শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবে। এর জন্য মেধাচর্চায় আরও বেশি উদ্যমী হতে হবে।

১৭ ফেব্রুয়ারি মাদারীপুরে প্রথম আলো-শিখো আয়োজিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। সকাল ৮টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জিপিএ-৫ পাওয়া নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দনপত্র ও সম্মাননা স্মারক বিতরণের মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। সকাল ১০টা পর্যন্ত চলে বিতরণ কার্যক্রম। সাড়ে ১০টায় শিল্পকলা একাডেমির শিল্পী ও বন্ধুসভার বন্ধুদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। জেলার ২৫০ কৃতী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

মাদারীপুর বন্ধুসভার সহসভাপতি আঞ্জুমান জুলিয়া ও উপদেষ্টা কুমার লাভলুর সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর প্রতিনিধি অজয় কুন্ডু। এরপর শিক্ষার্থীদের জীবনে চলার পথে সফল হওয়ার জন্য দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন মাদারীপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হিতেন চন্দ্র মণ্ডল, সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য ও সরকারি ইউনাইটেড ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মহাদেব বর্মণ, সরকারি শেখ হাসিনা একাডেমি অ্যান্ড উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ জাকিয়া সুলতানা, আলহাজ আমিনউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকমল হোসেন, ডনোভান সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুবল দাস, কবি ও সাহিত্যিক সুবল বিশ্বাস, প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক ফিরোজ চৌধুরী। আরও বক্তব্য দেন মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ, পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইনুদ্দিন, এটিএন বাংলা ও দৈনিক যুগান্তরের মাদারীপুর প্রতিনিধি গোলাম মওলা আকন, মাদারীপুর বন্ধুসভার সভাপতি অখিল সরকার, উপদেষ্টা সোহেল রানা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে জাকিয়া সুলতানা বলেন, যারা জিপিএ-৫ পেয়েছ, তারা প্রত্যেকে এখন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। জীবনে যদি লেখাপড়া না থাকে, তাহলে ছাত্রজীবন সুন্দর হয় না। তোমাদের জীবনকে সুন্দর করে তুলতে হলে ভালোভাবে লেখাপড়ার বিকল্প নেই। এসএসসির ধারাবাহিকতা আগামীতে ধরে রাখতে হবে, তাহলেই জীবন সুন্দর হবে। হিতেন চন্দ্র মণ্ডল বলেন, আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নবীন শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি একটি মহৎ উদ্যোগ। সামনে অনেকগুলো ধাপ এগোতে হবে। সেখানে আরও ভালো ফলাফল করতে হবে। তবেই তোমাদের হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাবে।

প্রথম আলোর এই আয়োজনের প্রশংসা করে মহাদেব বর্মণ বলেন, ‘প্রথম আলোর আয়োজন মানেই ভিন্ন কিছু। ভালোর সাথে থাকে পত্রিকাটি। আমি আশা করব, তোমরা ভালো মানুষ হবে। সততার সঙ্গে বেড়ে উঠবে। ভালো মানুষ হতে অনেক গুণ থাকা দরকার। তবে জীবনে চলার পথে কারও কোনো ক্ষতি না করে পথ চলবে, এটাই তোমাদের থেকে চাওয়া। তোমরা অনেক বইপুস্তক পড়বে। নিত্যনতুন জ্ঞান অর্জন করবে।’

শিক্ষার্থীদের জীবনে চলার পথে সব সময় সৎ সাহস রাখার অঙ্গীকার করালেন ইউএনও মো. মাইনুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সামনে বসা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য আগামী সাতটি বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সাত বছরে যদি শিক্ষার্থীরা মনোযোগী না থাকে, তাহলে ভালো ফল করেও জীবনের গতিবিধি বদলে যাবে। তাই পথ ভুল না করে মনে সৎ সাহস রাখতে হবে। পৃথিবীকে নেতৃত্ব দিতে হবে। এই লক্ষ্য নিয়ে তোমরা এগিয়ে যাবে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন বলেন, জীবনে সবচেয়ে প্রিয় মানুষ হচ্ছেন শিক্ষক। প্রত্যেক শিক্ষার্থী শিক্ষকদের নৈতিকতা, আচার মেনে চললে তাদের জীবন সুন্দর হবে। পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, জিপিএ-৫ পাওয়া এত শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে দেখতে পাওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার। কারণ, এরাই লাল–সবুজের নেতৃত্ব দেবে। কৃতী শিক্ষার্থীদের শুভকামনা জানিয়ে প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক ফিরোজ চৌধুরী বলেন, তোমরা ভবিষ্যতে আরও অনেক ভালো করবে। এগিয়ে যাবে বহু দূর। বাংলাদেশের জয় তোমাদের হাত ধরেই আসবে। তোমাদের ধন্যবাদ।

গত ১৬ জানুয়ারি চট্টগ্রামে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার আয়োজনের মধ্য দিয়ে সারা দেশের ৬৪টি জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম শিখোর পৃষ্ঠপোষকতায় শুরু হয়েছে জিপিএ-৫ উৎসব। আয়োজনটিতে সহযোগিতা করছে ফ্রেশ, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।
দিনব্যাপী এই সংবর্ধনায় ক্রেস্ট, সনদ, প্রথম আলো ই-পেপার (১ মাস) ও চরকির (১৫ দিন) ফ্রি সাবস্ক্রিপশন, ফ্রেশের সৌজন্যে স্ন্যাকস বক্সসহ অন্যান্য উপহার শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।