সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘ছাড়পত্র’ কাব্যগ্রন্থ নিয়ে পাঠচক্র করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভা। ১২ মার্চ সকালে জেলা শহরের শহীদ সাটু হল মার্কেটের প্রমিত কার্যালয়ে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
পাঠচক্রে বইটি নিয়ে আলোচনা করেন অর্থ সম্পাদক আলীউজ্জামান নূর। তিনি বলেন, সুকান্ত ভট্টাচার্য ছিলেন বাংলা সাহিত্যের মার্ক্সবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী ও প্রগতিশীল চেতনার অধিকারী তরুণ একজন কবি। মাত্র ২১ বছর বয়সে প্রতিভাবান এই কবির মৃত্যু হলেও সামান্য কয়েক বছরে অত্যাশ্চর্য কবিত্ব শক্তির পরিচয় দিয়েছেন তিনি। তাঁর কবিতায় স্থান পেয়েছে অন্যায়, অবিচার, শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও মুক্তির পথে সংগ্রামে একাত্মতার ঘোষণা।
কৈশোরে বিশ্বব্যাপী মহাযুদ্ধের ধ্বংস ও তাণ্ডবলীলা, ’৪৩–এর দুর্ভিক্ষের করালগ্রাসে অসহায় মানুষের হাহাকার ও মৃত্যু, ফ্যাসিবাদী আগ্রাসন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেখে সুকান্ত ভট্টাচার্য এতটাই আলোড়িত হন যে সামাজিক অনাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং নির্যাতিত মানুষের জন্য গভীর মমতা তাঁর কবিতায় বাণীরূপে স্থান পায়।
‘ছাড়পত্র’ সুকান্ত ভট্টাচার্যের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। এ কাব্যগ্রন্থ ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত হয়। এতে ৩৭টি কবিতা স্থান পেয়েছে। এ গ্রন্থের কবিতাগুলো রচিত হয় ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৭ সালের মধ্যে। মাত্র ২১ বছর বয়সে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার কিছুদিন আগে এ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। তাঁর লেখাগুলো এত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল যে ‘ছাড়পত্র’ কাব্যগ্রন্থ থেকেই অনেক উদ্ধৃতি নিয়ে বাংলাদেশের বাংলা বিষয়ে প্রকাশিত বইয়ে অনেক ভাবসম্প্রসারণ রচিত হয়েছে।
এ কাব্যগ্রন্থের বিখ্যাত কবিতাগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ছাড়পত্র’, ‘আঠারো বছর বয়স’, ‘হে মহাজীবন’, ‘চিল’, ‘খবর’, ‘মজুরদের ঝড়’, ‘রানার’, ‘মৃত্যুজয়ী গান’, ‘কৃষকের গান’ ইত্যাদি। তাঁর বিপ্লবী বাণীগুলো বর্তমান সময়ের বিভিন্ন আন্দোলনেও ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ থেকেই বোঝা যায় তিনি একজন বিপ্লবী ও জনমানুষের কবি ছিলেন।
পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আনোয়ার হোসেন, সভাপতি আরাফাত মিলেনিয়াম, সাধারণ সম্পাদক মাসরুফা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাফিউল হাসান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান, পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক ফাবিহা ফারজানা, কার্যনির্বাহী সদস্য সিফা বিনতে হাবিব, বন্ধু আসেফ উৎসসহ অন্যরা।
সভাপতি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভা