ছোট্ট ছোট্ট তিন নাতি-নাতনিকে নিয়ে পথে পথে ভিক্ষা করা ষাটোর্ধ্ব খালেদা বেগমের পাশে দাঁড়িয়েছে মাদারীপুর বন্ধুসভা। তাঁরা অসহায় এই পরিবারটিকে ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন। শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকায় খালেদা বেগমের জীর্ণ ঘরে গিয়ে এ সহযোগিতা প্রদান করেন বন্ধুরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর বন্ধুসভার সভাপতি অখিল সরকার, প্রথম আলোর প্রতিনিধি ও বন্ধুসভার উপদেষ্টা অজয় কুণ্ডু, অর্থ সম্পাদক আরিফুর রহমান, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক পূজা সরকার, বন্ধু অমল দত্ত প্রমুখ।
অসহায় খালেদা বেগমকে নিয়ে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো অনলাইনে ‘ছোট্ট তিন নাতি-নাতনি আর পাগল মেয়েকে নিয়ে পথে পথে খালেদা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ঘটনার পরে অনেকেই অসহায় খালেদার পাশে এসে দাঁড়ান। সম্প্রতি ঢাকার এক ব্যবসায়ী এই পরিবারকে সহযোগিতা করার জন বন্ধুসভার তহবিলে ৮ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা পাঠান। পরে বন্ধুরা আরও ২ হাজার টাকা সংযুক্ত করে ১০ হাজার টাকা খালেদা বেগমের হাতে তুলে দেন।
বন্ধুদের আন্তরিকতায় মুগ্ধ খালেদা বেগম বলেন, ‘আমার মাইয়াডা পাগল। মাথা ঠিক নাই। তিন নাতি-নাতনি লইয়া আমি যা পথে ঘুরে পাই, তাই দিয়া ওগের দুই বেলা খাওয়াই। শীতে অনেক কষ্ট হইতাছিল। এখন আর কষ্ট থাকব না। এই টাকা দিয়া নাতি–নাতনিগো শীতের নতুন জামা কিনা দিমু। বাজারে গিয়া ভালো খাবার কিনা দিমু। টাকা বাঁচলে যে নাতিডা হাঁটতে পারে না, ওরে একটা হুইলচেয়ার কিনমু।’
ইশান (৭), শাহবির (৫) ও ইশামনি (৮)—এই তিন শিশু অসহায় খালেদার নাতি-নাতনি। তাঁর মেয়ে নার্গিস বেগম মানসিক ভারসাম্যহীন। মেয়ে আর তিন নাতি-নাতনিকে নিয়ে খালেদা বেগম থাকেন সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকায়। এ এলাকার সালাম খানের বাগানের মধ্যে থাকা একটি ঝুপড়িঘরে বসবাস করেন। পরিবারটির সমস্ত ভার খালেদার বহন করতে হয়। মেয়ে আর নাতি-নাতনিকে নিয়ে পথে পথে ঘুরে ভিক্ষাবৃত্তি করে যা উপার্জন করেন, তা দিয়েই কোনোরকমে জীবন চলছে।
মাদারীপুর বন্ধুসভার সভাপতি অখিল সরকার বলেন, ‘অসহায় এই পরিবারটির পাশে আমরা আছি। মাঝেমধ্যেই আমরা বন্ধুসভার পক্ষ থেকে তাঁদের চিকিৎসা, খাদ্য থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা করব।’
দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক, মাদারীপুর বন্ধুসভা