বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদ রচিত ব্যঙ্গাত্মক গল্পগুচ্ছ ‘আয়না’–এর সাতটি গল্প নিয়ে পাঠচক্রের আসর করেছে নোয়াখালী বন্ধুসভা। ৮ আগস্ট বিকেলে প্রথম আলো নোয়াখালী অফিসে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
সাংগঠনিক সম্পাদক সানি তামজীদ আবুল মনসুর আহমদের জীবন ও সাহিত্যকর্মের ওপর আলোকপাত করে বলেন, ‘ব্যঙ্গাত্মক সাহিত্য রচনা করে একই সঙ্গে জনপ্রিয়তা পাওয়া ও প্রশংসিত হওয়া সম্ভব, তা আবুল মনসুর আহমদের লেখা না পড়লে জানতাম না। ওনার লেখা অনেক দিন আগের হলেও এখনো একই বিষয়বস্তুর বাস্তবিক পুনরাবৃত্তি সমাজে উপলব্ধি করা যায়।’
পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক শাহিদা রেশমি বলেন, ‘হুযুর কেবলা’ গল্পে একজন ভণ্ড পীরের স্বরূপ উন্মোচন করে লেখক দেখিয়েছেন, কীভাবে ধর্মের নামে স্বার্থসিদ্ধি করা হয়। আর ‘গো দেওতা–কা দেশ’ গল্পে ধর্মীয় অন্ধবিশ্বাসকে তীব্রভাবে বিদ্রূপ করেছেন।
দপ্তর সম্পাদক নয়ন চন্দ্র কুরী বলেন, ‘নায়েবে নবী’ গল্পে এমন এক সুবিধাবাদী ধর্মীয় নেতার চরিত্র চিত্রিত হয়েছে, যিনি নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য ধর্মীয় নীতিকে বিকৃত করতে দ্বিধা করেন না। আর ‘লীডরে কওম’ গল্পটিতে রাজনৈতিক ভণ্ডামি, নীতির অভাব ও ক্ষমতা দখলের নোংরা খেলাকে ব্যঙ্গাত্মক ঢঙে উপস্থাপন করা হয়েছে।
দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক সাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘মুজাহেদীন’ গল্পে এক আদর্শবাদী মানুষের কথা বলা হয়েছে, যিনি প্রচলিত অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। ‘বিদ্রোহী সংঘ’ গল্পে ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে একজন প্রতিবাদী মানুষের সংগ্রাম তুলে ধরা হয়েছে। ‘ধর্মরাজ্য’ গল্পে দেখানো হয়েছে, কীভাবে এক শ্রেণির মানুষ ধর্মের নামে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করে সমাজের সহজ–সরল মানুষকে শোষণ করে।
পাঠচক্রে অংশগ্রহণকারীরা একমত হন যে ‘আয়না’ গল্পগুচ্ছটি শুধু হাস্যরস নয়; বরং সমাজের নানা ত্রুটি চিহ্নিত করার একটি কার্যকর মাধ্যম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া সম্পাদক নজরুল ইসলাম, কার্যকরী সদস্য জুনাইন জিহানসহ অনেকে।
দপ্তর সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা