কারাবন্দীদের বই উপহার দিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার একটি ভালো কাজছবি: বন্ধুসভা

কারাগার—বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার ও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের থাকার স্থান। তবে এই চারদেয়ালের ভেতর জীবন থেমে যায় না। কারাবন্দীদের বেশির ভাগ সময় কাটে নিঃসঙ্গতা ও একঘেয়েমির মধ্যে। বিনোদনের তেমন কোনো সুযোগ নেই, নেই মনন চর্চার পরিসরও। অথচ বই হতে পারে তাঁদের আশার আলো। বই নীরবে কারাবন্দীদের চিন্তাভাবনা বদলে দিতে পারে, মননকে জাগিয়ে তুলতে পারে। পারে ভুল থেকে শেখার অনুপ্রেরণা দিতে ও নতুন জীবনের পথে পরিচালিত করতে।

প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের কারাবন্দীদের জন্য বিভিন্ন লেখকের শতাধিক বই উপহার দিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভা। ‘একটি ভালো কাজ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৬ অক্টোবর এ কার্যক্রম করেন বন্ধুরা।

বেলা একটার দিকে বন্ধুসভার সদস্যরা চার বান্ডিল বই নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে পৌঁছান। তাঁরা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক ওবায়দুর রহমানের কক্ষে যান। বইগুলো কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক ওবায়দুর রহমান ও জেলার মনজুরুল ইসলামের হাতে তুলে দেন। এ সময় জেলা কারাগার হাসপাতালের সহকারী সার্জন শাখাওয়াত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার সভাপতি অভিজিৎ রায়, সহসভাপতি সাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শাজাহান মিয়া, সদস্য মাইনুদ্দীন রুবেল এবং এস এ শোভন ও প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শাহাদৎ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের ধারণক্ষমতা ৭৮০ জন। কিন্তু বর্তমানে বন্দী রয়েছেন ১ হাজার ৭০০ জন। এর মধ্যে মহিলা বন্দী প্রায় ১০০ জন। প্রতিদিন জামিনে বেরিয়েও যাচ্ছেন ৫০-৬০ জন করে। প্রতিদিন নতুন বন্দীও কারাগারে আসছেন।

কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘১৯৯৮ সাল থেকেই প্রথম আলো নিয়মিত পাঠ করে আসছি। একসময় প্রথম আলোর রাশিফল দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম। প্রথম আলোর বস্তুনিষ্ঠ, সত্য ও নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে সংবাদ পরিবেশন করে। সংবাদের পাশাপাশি সামাজিক অনেক কর্মকাণ্ডও করে, এটি সবচেয়ে ভালো লাগে। কারাগারে একটি পাঠাগার রয়েছে। কিন্তু বইয়ের সংখ্যা অপ্রতুল ও মানসম্পন্ন বই নেই। অনেক কারাবন্দী বই পড়তে চান। কারাগারে যোগদানের পর এই প্রথম দেখলাম কেউ কারাগারে বই দিতে এসেছে। এই জন্যই প্রথম আলো ব্যতিক্রম। বইগুলো পড়ে কারাবন্দীরা উপকৃত হবেন। বই ভেতরের সত্তাকে আলোকিত করে। প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল হোক। প্রথম আলোর জন্য শুভকামনা রইল।’