বাংলা চলচ্চিত্র ও সাহিত্যের ইতিহাসে জহির রায়হান এক অমর নাম। তাঁর রচিত উপন্যাস ‘বরফ গলা নদী’ নিয়ে পাঠচক্রের আসর করেছে সিলেট বন্ধুসভা। ২২ আগস্ট প্রথম আলো সিলেট অফিসের বন্ধুসভা কক্ষে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের আনন্দ–বেদনা ও বেঁচে থাকার লড়াই নিয়ে ১৯৬৯ সালে রচিত হয় ‘বরফ গলা নদী’। সংসারের টানাপোড়েনে নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে মরিয়ম টিউশনি করিয়ে পরিবারের ব্যয়ভার কমানোর চেষ্টা করে। আর বড় ভাই মাহমুদ সাংবাদিকতার চাকরিতে প্রতিদিন টিকে থাকার সংগ্রাম করে। বাবা হাসমত সামান্য কেরানির চাকরি করেন। মা, ছোট বোন ও দুই ভাইকে নিয়ে পরিবারের খরচ মেটানো একা বাবার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই প্রত্যেক সদস্যকেই কোনো না কোনোভাবে এই সংগ্রামের অংশ হতে হয়। নোংরা গলির ভেতর ছোটখাটো এক ভাড়া বাসা, যার আবার ছাদ দিয়ে পানি পড়ে, মেঝেতে হাঁড়িপাতিল বসিয়ে পানি সামলাতে হয়। নড়বড়ে ছাদ কখন না জানি পড়ে যায়, সেই ভয়েই থাকে সবাই।
মরিয়ম যাকে পড়ায়, তার নাম সেলিনা, বেশ সম্ভ্রান্ত পরিবার। ওর বড় বোনের দেবর মনসুর মরিয়মের প্রতি কিছুটা আকর্ষিত বুঝতে পারলেও মরিয়ম তা পাত্তা দেয় না। কারণ, জাহেদ নামের পুরুষ তার অতীতটা বিষাদময় করে দেয়। ফলস্বরূপ পুরুষ সমাজের প্রতি একটা ক্ষোভ জন্ম নেয়। অন্যদিকে মাহমুদ সমাজের বৈষম্য আর ধনীদের ভণ্ডামি দেখে ক্ষুব্ধ হয়। ধনীদের প্রতি তাঁর মনে বেশ ক্ষোভ দেখা যায়।
এ ছাড়া গল্পে আরও কিছু চরিত্র আছে। মাহমুদের বোন হাসিনা লাফালাফি ও হইহুল্লোড় নিয়ে মেতে থাকে। লিলি, যার সঙ্গে মাহমুদের সম্পর্কের একটা টানাপোড়েন দেখা যায়।
পাঠচক্রে বন্ধু কিশোর দাশ বলেন, এ উপন্যাসে দরিদ্র সমাজের চিত্র উঠে এসেছে।
বন্ধু কৃত্য ছত্রী বলেন, এ যেন বেঁচে থাকার লড়াই, যা পাঠকদের অনুপ্রেরণা দেবে।
পাঠের আসরে উপস্থিত ছিলেন বন্ধু দেব রায় সৌমেন, শ্রেয়ান ঘোষ, সমীর বৈষ্ণব, ফয়সাল আহমেদ, সূবর্ণা দেব, অনুপমা দাস, শাহরিয়ার হক, মাজেদুল ইসলাম, অম্লান রায়, প্রত্যাশা তালুকদার, প্রীতম তালুকদার, দুরন্তসহ অন্য বন্ধুরা।
পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, সিলেট বন্ধুসভা