‘আইজ আইতোত এনা আরাম হইবে’

নীলফামারী জেলা শহরের টাউন ক্লাব মাঠে শীতবস্ত্র বিতরণছবি: প্রথম আলো

লাঠির ওপর ভর করে কম্বল নিতে আসেন ইটাখোলা ইউনিয়নের কবিরাজপাড়া গ্রামের ধনেশ্বর রায় (৭৫)। কম্বল হাতে পেয়ে বলেন, ‘এখান পায়া মোর খিব উপকার হইল বায়। কত জনেরঠে গেছু, কাও মোক এখান কম্বল দেয় না, জারোতে মুই মরি যাওছ। না চাইতে তোমরা বাড়ি থাকি ডাকি আনি কম্বল খান দিনেন। ভগবান তোমার ভালো কইরবে।’

বয়সের ভারে নুয়ে পড়া একই ইউনিয়নের প্রধানপাড়া গ্রামের হেমন্ত রায় (৭৫) বলেন, ‘খালি দাগলী দিয়া জার পালায়ছে না। কয় দিন থাকি বেজায় জার করেছে। হামার বুড়া মাইনসের খিব কষ্ট হয়ছে। আইজ আইতত এনা আরাম হইবে।’

কুয়াশার চাদর ভেদ করে শীতার্ত নারী-পুরুষেরা কম্বল নিতে একে একে জড়ো হতে থাকেন নীলফামারী জেলা শহরের টাউন ক্লাব মাঠে। ১৪ জানুয়ারি প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে সেখানে ১৫০ জন শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেন নীলফামারী বন্ধুসভার বন্ধুরা।

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ১৫০ জন শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেন নীলফামারী বন্ধুসভার বন্ধুরা
ছবি: প্রথম আলো

শীত কুয়াশা উপেক্ষা করে কেউ বাচ্চা কোলে, কেউ লাঠিতে ভর দিয়ে শীতের কম্বল নিতে আসেন। পৌরসভার সওদাগর পাড়ার বাসন্তী রানী ঋষি (৫৫) বলেন, ‘ঠান্ডাতে হামার খুব দুর্গতি যায়ছে। এই কম্বলখান দিয়া হামার উপকার হইবে।’

এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের টাউন ক্লাব মাঠে শীতের কম্বল বিতরণ করা হয়। সেখানে জেলা সদরের পৌরসভা, টুপামারী, ইটাখোলা, কুন্দপুকুর, খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের মধ্যে ১৫০টি কম্বল বিতরণ করা হয়। কম্বল বিতরণ কাজে অংশ নেন নীলফামারী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. নূরুল করিম, প্রথম আলো বন্ধুসভার উপদেষ্টা প্রকৌশলী জুলফিকার আলী, রত্না আক্তার, প্রথম আলো প্রতিনিধি মীর মাহমুদুল হাসান, কালিতলা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুধীর রায়, বন্ধুসভার সভাপতি রুবি আক্তার, সাধারণ সম্পাদক আরিফ ফয়সাল, সহসভাপতি নিপুন রায়, সহসাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রাব্বি, পাঠচক্র ও পাঠাগার সম্পাদক কল্পনা আক্তার, দুর্যোগ ও ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক ফারজানা মমো, জেন্ডার ও সমতাবিষয়ক সম্পাদক সুভাষ ঋষি প্রমুখ।