এমসি কলেজ বন্ধুসভার পাঠচক্রে হুমায়ূন আহমেদের ‘মধ্যাহ্ন’
হুমায়ূন আহমেদ রচিত ‘মধ্যাহ্ন’ উপন্যাসের পটভূমি ব্রিটিশ শাসনের সূর্য যখন মধ্যদুপুর পার করছিল, তখনকার। সে সময় হিন্দুদের মধ্যে জাত্যভিমান প্রবল ছিল। মুসলমানরা তাদের কাছে অস্পৃশ্য। বিরোধ মেটাতে যখন ইংরেজরা বঙ্গভঙ্গের ঘোষণা দেয়, তখনকার চিত্র দিয়ে শুরু হয়েছে উপন্যাস। গোটা কাহিনি আবর্তিত হয়েছে ময়মনসিংহের এক অচেনা গ্রাম বান্ধবপুরের মানুষের জীবনপ্রবাহ এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবর্তনের ওপর ভিত্তি করে।
ইতিহাসনির্ভর উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ঐতিহাসিক কাহিনির ওপর ভিত্তি করে তার সঙ্গে লেখকের কল্পনাপ্রসূত চরিত্রের প্রবাহ। গল্পের হরিচরণ, জহির কিংবা ধনুশেখ বাস্তব কি না, জানার উপায় নেই। কিন্তু বাস্তবের ক্ষুদিরাম, সূর্য সেন, পণ্ডিত শিবশংকর, বিভূতিভূষণ, তারাশংকর, নজরুল, জয়নুল আবেদিন, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে এমনভাবে স্থান-কাল-পাত্র মিলিয়ে গল্প যেভাবে এগিয়েছে, তাতে পাঠকের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে বাধ্য।
উপন্যাসটির অন্যতম দিক হচ্ছে প্রতিটি অধ্যায়ের পর তৎকালীন রাজনৈতিক প্রবাহচিত্রের স্বরূপ বর্ণনা। সে সময় কীভাবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আত্মাহুতি দিচ্ছিলেন বিদ্রোহীরা, মহাত্মা গান্ধীর অসফল অসহযোগ আন্দোলন, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জনপ্রিয়তা, কংগ্রেসের উত্থান, জিন্নাহর মুসলিম লীগ, ভারত ভাগের দিকে অগ্রসর—এসব ইতিহাস সংক্ষিপ্তভাবে উঠে এসেছে। অনুসন্ধিৎসু পাঠকদের মনে এই ক্ষুদ্র ইতিহাসের জের ধরে আরও কিছু বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করবে ‘মধ্যাহ্ন’।
বইটি নিয়ে পাঠের আসর করেছে এমসি কলেজ বন্ধুসভা। ১৫ ফেব্রুয়ারি এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে এটি অনুষ্ঠিত হয়। সঞ্চালনা করেন পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক সামিয়া আক্তার।
উপস্থিত বন্ধুরা বইটি নিয়ে আলোচনা করেন, রিভিউ দেন এবং রিভিউ শেষে নিজ মন্তব্য ও মনোভাব প্রকাশ করেন। সহসভাপতি রুবেল ফারহিন বলেন, ‘লেখকের সাবলীল ভাষায় তৎকালীন ইতিহাস ও ব্রিটিশ শাসন—সবকিছু স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে।’
পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, এমসি কলেজ বন্ধুসভা