‘সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হয়ে উঠুক বিতর্ক’

যুক্তি উপস্থাপন করছেন এক বিতার্কিক
ছবি: সাজেদুর রহমান

সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার বিলুপ্ত হচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে দুই মেরুর বরফ গলে যাচ্ছে। এই যখন বর্তমান প্রেক্ষাপট, তখন কঠোর আইনের বাস্তবায়ন ব্যতিরেকে পরিবেশ সংরক্ষণ কী করে সম্ভব? এভাবেই বিতর্কের বক্তব্য উপস্থাপন করে চূড়ান্ত পর্বের বিপক্ষ দলের দলনেতা স্বাগতা সারথী। বিতর্কের বিষয় ছিল ‘পরিবেশ রক্ষায় ব্যক্তির ভূমিকাই প্রধান’।

‘যোগ দাও যুক্তির মেলায়’ স্লোগানে ২৮ জুলাই দিনাজপুর সারদেশ্বরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনব্যাপী পুষ্টি–প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসব-২০২৩- এর দিনাজপুর পর্ব। বিতর্কে অংশগ্রহণ করে জেলার ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। চূড়ান্ত পর্বে সারদেশ্বরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন হয় দিনাজপুর সেন্ট ফিলিপস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ।

সকাল আটটায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন হয়। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর প্রতিনিধি রাজিউল ইসলাম। এরপর বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদুল হক বলেন, যারা বিতর্ক বিষয়ে জ্ঞানচর্চা করে, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে তারা শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে। একই সঙ্গে অন্যের মতামত বা সমালোচনা শোনার মানসিকতা তৈরি হয়। পুষ্টি–প্রথম আলো এই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এভাবে সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হয়ে উঠুক বিতর্ক।

উদ্বোধনে আরও উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর সারদেশ্বরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার রায়। তিনি বলেন, বিতর্ক হচ্ছে একটি নান্দনিক ঝগড়া, যার মধ্য দিয়ে মানুষের মেধা ও মনন প্রস্ফুটিত হয়।

বিচারকদের সঙ্গে পুষ্টি–প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসব ২০২৩-এর দিনাজপুর আঞ্চলিক পর্বের চ্যাম্পিয়ান ও রানার্সআপ দল
ছবি: সাজেদুর রহমান

পুরো আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন দিনাজপুর বন্ধুসভা ও হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) বন্ধুসভার বন্ধুরা। দিনব্যাপী বিতর্ক উৎসব পরিচালিত হয় প্রথম, দ্বিতীয়, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল—এ চারটি ধাপে। সনাতনী বিতর্কের পাশাপাশি বারোয়ারি বিতর্ক ও বিতর্ক কুইজে উচ্ছ্বসিত ছিল শিক্ষার্থীরা।

বিতর্কে বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন হাবিপ্রবির সহকারী অধ্যাপক সুব্রত কুমার প্রামানিক, কালেক্টরেট স্কুলের অধ্যক্ষ রায়হানুল ইসলাম, হাবিপ্রবির ডিবেট সোসাইটির সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহনাফ শাহরিয়ার, মুন্তাসির সাদী, শাকিল হাসান ও খাইরুন্নেসা তাকিয়া।

বিতর্ক শেষে বিজয়ীদের হাতে ট্রফি, মেডেল, টি-শার্ট ও সনদ তুলে দেন অতিথিরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান আবদুল জলিল আহমেদ, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শহিদুল মান্নাফ কবির প্রমুখ। আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মাদকবিরোধী শপথ পাঠ করান জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শহিদুল মান্নাফ কবির। তিনি বলেন, ‘আমরা কেউ কখনোই মাদক গ্রহণ করব না। যারা মাদক সেবনকারী, তারা কখনোই প্রকৃত বন্ধু হতে পারে না। মাদক শুধু একজন ব্যক্তিকে নয়, পুরো পরিবার এমনকি পুরো সমাজকে ধ্বংস করে দেয়।’

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন দিনাজপুর বন্ধুসভার সভাপতি মুনিরা শাহনাজ চৌধুরী। উৎসবে বন্ধুদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর বন্ধুসভার সহসভাপতি সাব্বির হাসান, সুব্রত সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাদমান শাকিব, মানসুর নাদিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদর্শন চন্দ্র অধিকারী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বেলালুর রহমান, তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক সাজেদুর রহমান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক সাদমান হক, বন্ধু খেয়া, অনুপ রায়, রাকিব হোসেন, রায়হান কবির, রবিউল ইসলাম, শুভজিৎ রায়, দিপু রায়, মনোরঞ্জন সিংহ, দিয়া বসাক বর্ষাসহ অন্য বন্ধুরা।

সাধারণ সম্পাদক, দিনাজপুর বন্ধুসভা