গল্পে গল্পে চারু ও কারু

কর্মশালা শেষে আলোচকদের সঙ্গে অংশগ্রহণকারীরা
ছবি: বন্ধুসভা

‘মানুষের ব্যক্তিগত সম্পদ হলো তার চিন্তা। প্রত্যেকটি মানুষকেই নিজস্ব প্রতিভা, কোন জিনিসের প্রতি আগ্রহ, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। নিজে নিজে কাজ শিখতে হলে পৃথিবীব্যাপী কাজগুলো দেখতে হবে। এরপর সেগুলো নিজের মতো গুছিয়ে নেব আমরা। মানুষ তখনই বিখ্যাত হয়, যখন সে যেকোনো কাজকে ভিন্ন পথে সহজভাবে করে। শিশুদের প্রতিভা ফুটিয়ে তোলার সুযোগ করে দিতে হবে। তারা নিজের ইচ্ছেমতো আঁকবে, গাইবে। ওদের চাপ দেওয়া উচিত নয়’, দিনাজপুর বন্ধুসভা আয়োজিত ‘গল্পে গল্পে চারু ও কারু’ কর্মশালায় এসব কথা বলেন শিল্পী সৈয়দ মামুন রশিদ।

২৪ নভেম্বর প্রথম আলোর দিনাজপুর অফিসে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় সৈয়দ মামুন রশিদ চারু ও কারুকলা এবং টেপা পুতুলের ছবি এঁকে চারুকলা সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেন। তিনি বলেন, ‘শিল্পী হতে পেরেছি কি না জানি না, তবে চেষ্টা করছি। চারু ও কারুশিল্পকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়।’ সৈয়দ মামুন রশিদ বলেন, ‘আমার ছোটবেলা থেকে ছবি আঁকার প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল। কলেজ শেষে ভর্তি হই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে। শিল্পী হতে গিয়ে অনেক চড়াই-উতরাই পার হতে হয়েছে। কখনো থেমে যাইনি। প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রমই আমাকে এ জায়গায় নিয়ে এসেছে।’

দিনাজপুর বন্ধুসভার কর্মশালা
ছবি: বন্ধুসভা

স্বাগত বক্তব্যে প্রথম আলোর প্রতিনিধি রাজিউর রহমান বলেন, ‘তখন আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। একদিন হঠাৎ মামুন ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয়। ওনার সঙ্গে চারুকলা বিভাগের ব্যবহারিক কক্ষে গিয়ে চারুকলা সম্পর্কে ধারণা পাল্টে যায়। শিক্ষার্থীরা রাত জেগে মানুষের অবয়ব, ভাস্কর্য নির্মাণ করছে। বিষয়টা আমার কাছে দারুণ রোমাঞ্চকর মনে হয়েছিল।’

দেশসেরা শিক্ষক ফজলুর রহমান বলেন, ‘ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করি আমি। তাদের উৎসাহ প্রদান করি। শুধু নিজে নয়, আরেকজনকে নিয়ে ভালো থাকায় জীবন। আমাকে প্রথম আলো সেরা শিক্ষক সম্মাননা যেদিন প্রদান করে, সেই দিনটিতে আমি আমার সফলতা পেয়ে গেছি। সেখানে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনার জীবনের সফলতা কী? আমি বলেছি, হতদরিদ্র পিছিয়ে পড়া স্কুলবিমুখ শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করাই আমার জীবনের সফলতা।’

দিনাজপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ইতিহাস ও টেরাকোটা একটির সঙ্গে আরেকটি জড়িত। সেই প্রাচীন ব্রাহ্মীলিপি থেকে মানুষ বাঙালি জাতি যে বীরের জাতি, তা জানতে পেরেছে। প্রথম আলোর একটি স্লোগান আছে, চোখ খুললেই চোখ খুলে দেয়। এটা আমাদের বুঝতে হবে।’

উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সমাপনী বক্তব্য দেন দিনাজপুর বন্ধুসভার সভাপতি মুনিরা শাহানাজ চৌধুরী। সঞ্চালনা করেন সুব্রত সরকার।

বন্ধু, দিনাজপুর বন্ধুসভা