‘সত্যে তথ্যে ২৫’ প্রতিপাদ্যে প্রথম আলোর রজতজয়ন্তীতে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ বন্ধুসভার বন্ধুরা বিভিন্ন সড়কের গতিরোধক (স্পিড ব্রেকার) চিহিৃতকরণে রং করে দিয়েছেন। গত ২৯ ও ৩০ অক্টোবর গোয়ালন্দ বাজার প্রধান সড়কসহ চারটি গ্রামীণ সড়কের গতিরোধকে রং করা হয়। পাশাপাশি গাছে লাগানো বিভিন্ন ফেস্টুনের পেরেক তুলে দিয়ে সচেতনতামূলক বার্তাও দিয়েছেন বন্ধুরা।
বন্ধুসভার বন্ধুরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক থেকে গোয়ালন্দ বাজারগামী প্রধান সড়কের গতিরোধকগুলোর রং মুছে যাওয়ায় দূর থেকে বোঝার কোনো উপায় ছিল না। এর ফলে চলাচলকারী রিকশা, মোটরসাইকেলসহ অনেক যানবাহন মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনার কবলে পড়ত। বিশেষ করে গোয়ালন্দ শহীদ স্মৃতি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এবং লোটাস কলেজিয়েট স্কুলের সামনের গতিরোধকে রং না থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটত।
দিনে যানবাহনের ভিড় এড়াতে গত রবি ও সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত প্রধান সড়কের গতিরোধকের কাজ করেন বন্ধুরা। বন্ধুসভার এমন কাজের খবর পেয়ে সহমর্মিতা ও ধন্যবাদ জানাতে সেখানে ছুটে আসেন গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র মো. নজরুল ইসলাম। এমন কাজের প্রশংসাও করেন তিনি।
পৌর মেয়র মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সব সময় দেখে এসেছি, যা কিছু ভালো, তার সাথেই প্রথম আলো। আজও তার প্রমাণ রেখেছে গোয়ালন্দ বন্ধুসভা। পৌরসভার রাস্তাটি হওয়ার পর ঠিকাদার কোনোভাবে রঙের কাজ শেষ করলেও কিছুদিন পর রং মুছে যায়। এমন অবস্থা দেখে বন্ধুসভার বন্ধুরা যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, পৌরবাসীর পক্ষ থেকে তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাই।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র মো. ফজলুল হক, কাউন্সিলর আলাউদ্দিন মৃধা, গোয়ালন্দ বাজার ব্যবসায়ী পরিষদের সভাপতি সিদ্দিক মিয়া, গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তুহিন দেওয়ান, সাংস্কৃতিক কর্মী আবদুল আজীজসহ অনেকে।
স্থানীয় কাউন্সিলর মো. ফজলুল হক বলেন, ‘লোটাস কলেজিয়েট স্কুল, শহীদ স্মৃতি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়সহ কয়েকটি স্থানে স্পিডব্রেকারে দীর্ঘদিন ধরে রং মুছে যাওয়ায় মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটত। স্থানীয়ভাবে আমাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। তার আগেই প্রথম আলো বন্ধুসভা এমন সুন্দর কাজটি করেছে। তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। জয় হোক প্রথম আলোর, জয় হোক বন্ধুসভার।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আবদুল জব্বার কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সালাহ উদ্দিন মাহমুদ রেজা তাঁর ফেসবুক আইডিতে গতিরোধকের ছবি পোস্ট করে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে লিখেন, ‘উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য হওয়ার সুবাদে বাসস্ট্যান্ড-বাজার রোডের স্পিডব্রেকারগুলোতে রং করার বিষয়ে বারবার আবেদন জানিয়েও ব্যর্থ হয়েছি। আজ সকালে রাস্তায় এসে মন ভালো হওয়ার মতো দৃশ্য চোখে পড়ল। ধন্যবাদ গোয়ালন্দ বন্ধুসভাকে, মহৎ কাজটির জন্য।’
কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো প্রতিনিধি রাশেদুল হক রায়হান, বন্ধুসভার সভাপতি লুৎফর রহমান, সাবেক সভাপতি শেখর আহম্মেদ বাবু, সহসভাপতি জীবন চক্রবর্তী, ডা. জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সফিক মন্ডল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মইনুল হক, রফিকুল ইসলাম, ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ন আহম্মেদ, নাজমুল হক, আফজাল হোসেনসহ অন্য বন্ধুরা।