হুমায়ূন আহমেদের ‘ফেরা’ উপন্যাসে উঠে এসেছে ভাটি বা হাওর অঞ্চলের মানুষের জীবন, সংগ্রাম ও সংস্কৃতি। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের বিস্তৃত হাওর এলাকায় নদী, জোয়ার-ভাটা ও প্রকৃতির খেয়ালি রূপ যে জীবনযাত্রা গড়ে তুলেছে, উপন্যাসটি সেই বাস্তবতার দলিল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
উপন্যাসে ডাক্তার, মতি মিয়া, নরহরি দাস, ছোট চৌধুরী প্রমুখ চরিত্রের মাধ্যমে সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাদের জীবনযাত্রা, সম্পর্ক ও সংগ্রামের বর্ণনায় পাঠক সহজেই হাওর অঞ্চলের সঙ্গে সংযোগ অনুভব করেন।
গল্পে উঠে এসেছে ভাটি অঞ্চলের সমৃদ্ধ লোকসংস্কৃতি। নৌকাবাইচ, মেয়েলি গীত, পুঁথি গান, বাঘাই শিরনি উৎসব প্রভৃতি সামাজিক আয়োজন কাহিনিকে দিয়েছে বাস্তবতার রূপ। পাশাপাশি জলকন্যা দেখা, ফিরাইল ফকির, আগুনের গোলা কিংবা মাইট কলসির মতো লোকবিশ্বাসও গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছে। উপন্যাসজুড়ে প্রকৃতি এক প্রধান চরিত্র। বিস্তৃত নদী ও জলরাশি মানুষকে যেমন জীবিকা দিয়েছে, তেমনি অনিশ্চয়তা ও বৈরাগ্যও দিয়েছে। অনেক চরিত্রের মধ্যেই ঘরছাড়া মনোভাব ও নিরুদ্দেশ হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে হুমায়ূন আহমেদের ‘ফেরা’ উপন্যাস নিয়ে পাঠচক্রের আসর করে সিলেট বন্ধুসভা। প্রথম আলো সিলেট অফিসের বন্ধুসভা কক্ষে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
পাঠচক্রে বইটির বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করেন বন্ধু ফয়সাল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘উপন্যাসটি বাংলাদেশের নদীমাতৃক জীবন ও সংস্কৃতির এক জীবন্ত দলিল। যেখানে মানুষ ও প্রকৃতি একে অপরের সঙ্গে মিশে গেছে।’
পাঠের আসরে উপস্থিত ছিলেন বন্ধু দেব রায় সৌমেন, শ্রেয়ান ঘোষ, সমীর বৈষ্ণব, সূবর্ণা দেব, অনুপমা দাস, সমরজিৎ হালদার, পিয়াস সরকার, মাজেদুল ইসলাম, শতাব্দী দত্ত, প্রীতম তালুকদার, মাহবুব হোসাইনসহ অন্যান্য বন্ধুরা।
পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, সিলেট বন্ধুসভা