ন্যায়-অন্যায়ের দ্বন্দ্বে আদর্শ সমাজ গড়ার বার্তা ‘পল্লী সমাজ’

সিলেট বন্ধুসভার ভার্চ্যুয়াল পাঠচক্রের আসর।

‘পল্লী সমাজ’ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত সমাজসমস্যামূলক উপন্যাস। ১৯১৬ সালে ভারতবর্ষ পত্রিকার মালিক গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্স ১৯টি পরিচ্ছেদ পুস্তকাকারে প্রকাশ করেন। এই উপন্যাসে গ্রামবাংলার সমাজ-সংসারের বিষয়ে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় যেসব মহামূল্যবান মন্তব্যগুলো করে গেছেন, তা চিরস্মরণীয়।

উপন্যাসটি নিয়ে ৮ জুলাই অনলাইনে পাঠচক্রের আসর করেছে সিলেট বন্ধুসভা। উপন্যাসের বিষয়বস্তু নিয়ে বন্ধু অনুপমা দাস বলেন, ‘ভালোর বিরুদ্ধে মন্দের ষড়যন্ত্র সব সময়, শেষ পর্যন্ত জয় ভালো ও ন্যায়ের হয়; যা “পল্লী সমাজ” উপন্যাসেও পরিলক্ষিত হয়।’

বন্ধু যুবরাজ রায় বলেন, ‘সব মিলিয়ে “পল্লী সমাজ” শুধু একটি উপন্যাস নয়, এটি এক নৈতিক ও সামাজিক শিক্ষার উৎস।’ এ ছাড়া বইটি পাঠ করেন বন্ধু সুমন দাস ও মিনথিয়া রহমান।

‘পল্লী সমাজ’ উপন্যাসে গ্রামীণ সমাজের সাধারণ মানুষের আর্থিক দুরাবস্থা, জাতপাত নিয়ে বিবাদ, কৃষকের করুণ কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে। এ ছাড়া হিংসা, ষড়যন্ত্র, জমিদারের অত্যাচারের কাহিনি এই উপন্যাসে নিখুঁতভাবে লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন। একই সঙ্গে অন্যতম মূল চরিত্র বেণী ঘোষালের পল্লী সমাজ ভাঙার মধ্য দিয়ে রমেশের আদর্শ পল্লী সমাজ গড়ার কথাও সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।

সবাই মনে করেন, গ্রামের মানুষেরা সহজ সরল; কিন্তু নিজ স্বার্থের জন্য যে তারা জঘন্য কুটিলতার আশ্রয় নিতে পিছপা হয় না, তা তুলে ধরেছেন লেখক। উপন্যাসের কাহিনি আবর্তিত হয় কিছু পরিবারকে নিয়ে, যারা কুঁয়াপুর গ্রামের জমিদার। তাদের মধ্যেও রয়েছে দ্বন্দ্ব। শিক্ষিত ছেলে রমেশ তার গ্রামের অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে চায়, সমাজের ভালোর জন্য কাজ করতে চায়, যা তার খুড়তুতো ভাই বেণী ঘোষাল ও অন্যান্য স্বার্থান্ধ মুখোশধারী মানুষের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলস্বরূপ, সবাই মিলে রমেশের ক্ষতি সাধনে উঠেপড়ে লাগে। তবু রমেশকে তার মানবধর্ম পালন থেকে কেউ ঠেকাতে পারেনি।

পাঠের আসরে আরও উপস্থিত ছিলেন বন্ধু দেব রায় সৌমেন, ফয়সাল আহমেদ, অনুপমা দাস, প্রীতম তালুকদার, কিশোর দাশ, প্রণব চৌধুরীসহ অন্যান্য বন্ধুরা।

পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, সিলেট বন্ধুসভা