বিলুপ্তপ্রায় কৃষি উপকরণ নিয়ে বাকৃবি কৃষি মিউজিয়াম

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি মিউজিয়াম ঘুরে দেখছেন ময়মনসিংহ বন্ধুসভার বন্ধুরাছবি: বন্ধুসভা

হাওর, জঙ্গল, মহিষের শিং—এই তিনে ময়মনসিং। প্রবাদ-প্রবচনে এমনভাবেই পরিচিত ময়মনসিংহ জেলা। ১৩টি উপজেলা নিয়ে বিস্তৃত ময়মনসিংহে রয়েছে কৃষির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অনন্য ভান্ডার। কৃষি ও কৃষকের ইতিহাস সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ করতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কৃষি মিউজিয়াম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে প্রায় ৫০০ মিটার পশ্চিমে ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনে অবস্থিত এ জাদুঘরে দেখা মেলে কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত নানা উপকরণ।

কৃষি মিউজিয়াম প্রাঙ্গণে ময়মনসিংহ বন্ধুসভার বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

১৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে কৃষি মিউজিয়ামটি পরিদর্শন করেন ময়মনসিংহ বন্ধুসভার বন্ধুরা। পাঁচ একর আয়তনের অষ্টাভুজী এ ভবনের মধ্যবর্তী অংশে রয়েছে ফুলের বাগান। ভবনে অফিসের জন্য দুটি কক্ষ ও প্রদর্শনীর জন্য ছয়টি কক্ষ রয়েছে। এসব কক্ষে সংরক্ষিত আছে কৃষকের ব্যবহার্য ঐতিহ্যবাহী ও বিলুপ্তপ্রায় নানা কৃষি উপকরণ—বাঁশ, বেত, কাঠ ও লোহা দিয়ে তৈরি সরঞ্জাম, আধুনিক কৃষি যন্ত্রাংশ, তামা-পিতলের জিনিসপত্র, মাটির তৈরি সরঞ্জাম, সার ও মাটিজাত উপকরণ, ফসলের বীজ, বিরল ধান, ঔষধি গাছ, ফল-মূল। রয়েছে মাছ ধরার সরঞ্জাম, ফরমালিনে সংরক্ষিত মাছ, প্রাণীর কঙ্কাল, বাদ্যযন্ত্র, অলংকারসহ অনেক উপকরণ।

বাকৃবির শিক্ষার্থী ও ময়মনসিংহ বন্ধুসভার স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া সম্পাদক আলমা আরিজ জানান, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ হোসেনের স্বপ্ন থেকে এ জাদুঘর গড়ে ওঠে। ২০০২ সালের ২৪ জানুয়ারি উপাচার্য অধ্যাপক মো. মুস্তাফিজুর রহমান ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর উপাচার্য প্রফেসর মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম উদ্বোধন করেন। পরবর্তী সময়ে ২০০৭ সালের ৩০ জুন উপাচার্য অধ্যাপক মোশারফ হোসাইন মিঞাঁ জনসাধারণের জন্য এটি উন্মুক্ত করেন।

সংরক্ষিত আছে কৃষকের ব্যবহার্য ঐতিহ্যবাহী ও বিলুপ্তপ্রায় নানা কৃষি উপকরণ
ছবি: বন্ধুসভা

পরিদর্শন শেষে মিউজিয়ামের পরিদর্শন বইয়ে বন্ধুরা তাঁদের মন্তব্য লিখে অনুভূতি প্রকাশ করেন। উপদেষ্টা মো. আবুল বাশার বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশে কৃষি এগিয়ে গেলেও বিলুপ্তপ্রায় প্রাচীন কৃষি উপকরণকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করছে এই কৃষি জাদুঘর।’

সাংগঠনিক সম্পাদক রাবিয়াতুল বুশরা বলেন, ‘কৃষি মিউজিয়াম শুধু প্রদর্শনী নয়, বরং আমাদের কৃষির শেকড় ও ঐতিহ্য জানার অনন্য ভান্ডার। এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মহামূল্যবান সম্পদ হয়ে থাকবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সভাপতি মোহাম্মদ খালিদ হাসান, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উম্মে সালমা, ম্যাগাজিন সম্পাদক মুনমুন আহমেদ, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক তাওমান জাহান, বন্ধু মো. উজ্জ্বল, সাজিদ উল্লাহ, সাখাওয়াত হোসেনসহ অন্য বন্ধুরা।

সভাপতি, ময়মনসিংহ বন্ধুসভা