রাজবাড়ীতে ‘আরেক ফাল্গুন’ বই নিয়ে পাঠচক্র

পাঠচক্রের আসরে বই পাঠ করছেন এক বন্ধু
ছবি: বন্ধুসভা

রাজবাড়ীতে জহির রায়হানের ‘আরেক ফাল্গুন’ বই নিয়ে পাঠচক্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় শহরের ১ নম্বর পৌর মিলেনিয়াম মার্কেটে রাজবাড়ী বন্ধুসভার উদ্যোগে পাঠচক্রের আয়োজন করা হয়।

‘আরেক ফাল্গুন’ বইয়ের ওপর পাঠচক্রে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক কুদরত-ই-গুল।

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রাজবাড়ী বন্ধুসভার সভাপতি অধ্যাপক আরিফুর রহমান, উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, রাজবাড়ী সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের প্রভাষক অরুপ কুমার প্রামাণিক, বন্ধুসভার সহসভাপতি আইনজীবী অনুপ কুমার দাস, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক সংগীতশিল্পী আবদুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মহসিন মৃধা, বন্ধুসভার সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুভ চন্দ্র সিংহ, নাহিদুল ইসলাম, কানিজ ফাতেমা, আবদুল হালিম, মো. জনি, মাকসুদা আক্তার, জান্নাতুল ফেরদৌস। পাঠচক্র সমন্বয় করেন প্রথম আলোর প্রতিনিধি এজাজ আহম্মেদ।

শহীদ দিবস পালনের প্রস্তুতি, সরকারি বাধা ইত্যাদি কেন্দ্র করে ‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসের পটভূমি রচিত। ‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসের কাহিনির স্থিতিকাল মাত্র তিন দিন, দুই রাত। প্রথম দিনের কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে কাহিনির সূচনা। প্রথম দিন, রাত এবং দ্বিতীয় দিন ও রাত ধরে চলেছে একুশ পালনের বিরামহীন প্রস্তুতি। তৃতীয় দিন গল্পের চূড়ান্তকাল। মিছিল এবং পুলিশের সংঘর্ষের মাধ্যমে অতিক্রান্ত হয়েছে এ চূড়ান্ত কালটি। অতঃপর দিনের শেষে কারা তোরণ প্রাঙ্গণে গল্পের পরিসমাপ্তি। সেই জন্য এর ব্যাপ্তিকাল সীমিত। কিছু ঘটনায় বিস্তৃত উপন্যাসের কলেবর।

এ দেশের বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিতে একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র জহির রায়হান। তিনি ছিলেন এ দেশের চলচ্চিত্রের একজন সফল নির্মাতা। তিনি ১৯৩৩ সালে ফেনীতে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। ভাষা আন্দোলনে জহির রায়হান যোগ দেন একজন সক্রিয় ও সাহসী কর্মী হিসেবে। তখন তিনি ছিলেন জগন্নাথ কলেজের ছাত্র। ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সময় জহির রায়হান কারাবরণ করেন। ১৯৫৫ সালে একুশে উদ্‌যাপনের সময় তাঁকে আবার কারাবরণ করতে হয়। তাঁর ভাই শহীদুল্লা কায়সারসহ আরও অনেক বুদ্ধিজীবীকে বিহারিরা আটকে রেখেছে বলে খবর পেয়ে ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি সকালে তিনি মিরপুর ১২ নম্বরের দিকে যান। এরপর থেকে নিখোঁজ। তাঁর লাশ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।