নোয়াখালীতে বন্যার্ত ২৫ পরিবার পেল গাজীপুর বন্ধুসভার উপহার
ছোট ভাইয়ের কথা বলে কাঁদছিল ১০ বছরের শিশু রাখি। এটা কোনো গল্প কিংবা সিনেমার কাহিনি নয়, বাস্তবেই নোয়াখালীর নেওয়াজপুর গ্রামে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে গাজীপুর বন্ধুসভার বন্ধুদের। এ রকম আরও এক অসহায় দরিদ্র বৃদ্ধার ঘরে গেলে তিনি জানান, তাঁর ঘরে আজ ১৩ দিন ধরে খাবার রান্না করা হয় না। শুকনা খাবার খেয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘কিল্লাই ভাই দুগা ভাত অবো নি। ভাত খাবার লাই আত্মা টনটন কইচ্চে।’
নোয়াখালীতে এবার স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। পানি নেমে গেলেও এখনো অসংখ্য পরিবার ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। সহায়সম্বল হারিয়ে বহু কষ্টে দিন পার করছে তারা। এই মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমাতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে গাজীপুর বন্ধুসভা। বন্ধুরা ১৩ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর মাইজদী সদর উপজেলার নিয়াজপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের ২৫টি বন্যার্ত পরিবারকে নগদ অর্থ উপহার দেন।
এই উপহার প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করেছেন নোয়াখালী বন্ধুসভার বন্ধুরা। নিয়াজপুর ইউনিয়নের অনেক স্থানে এখনো পানি না কমায় বন্ধুরা দুটি দলে ভাগ হয়ে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এগুলো পৌঁছে দেন।
ধর্মপুর গ্রামের এক বানভাসি উপহার পেয়ে খুশি হয়ে বলেন, ‘ছোড মাইয়া গা আইজ্জা কদিন দরি কাইনতে আছে ঘরে ভাত নাই। হানির লাই হেতে কামে যাইতে হারে ন। আন্নেগো টেয়া দি কোগা চাইল ডাইল কিনুম।’
গাজীপুর বন্ধুসভার দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক শাহরিয়ার পারভেজকে এক বানভাসি বলেন, ‘ভাইগো ঘরে পানিও নাই।’
সাধারণ সম্পাদক আরাফাত মন্ডল বলেন, ‘বৃষ্টির মধ্যে কোমরসমান পানি পার হয়ে উপহার নিয়ে যাওয়ার পর তাঁদের মুখে যে হাসিটা দেখেছি, এটাই আমাদের সার্থকতা। তাঁরা অনেক খুশি হয়েছেন। কথা বলে বুঝলাম, অনেকেই খাবার দিয়ে গেছে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে যে ঘুরে দাঁড়াতে টাকারও দরকার, তা কেউ ভাবেনি।’
এ কার্যক্রমে আরও উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর বন্ধুসভার সভাপতি উম্মে কুলসুম ইস্তিলা, সহসভাপতি সজীব চৌধুরী, ম্যাগাজিন সম্পাদক আবিদা সুলতানা, বন্ধু ফারজানা আলম, আবদুল্লাহ আয়ান, নোয়াখালী বন্ধুসভার সভাপতি আসিফ আহমেদ, সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক নাহিদা সুলতানা, বন্ধু আরাফাত সামিসহ অন্য বন্ধুরা।
সভাপতি, গাজীপুর বন্ধুসভা