সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপাখ্যান আহমদ ছফার ‘সূর্য তুমি সাথী’

শাবিপ্রবি বন্ধুসভার পাঠচক্রে আহমদ ছফার ‘সূর্য তুমি সাথী’ছবি: বন্ধুসভা

‘সূর্য তুমি সাথী’ আহমদ ছফার প্রথম উপন্যাস, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক হৃদয়গ্রাহী উপাখ্যান। কেন্দ্রীয় চরিত্র হাসিম। সে বন থেকে বাঁশ-কাঠ কেটে এনে জীবিকা নির্বাহ করে। লোকে তাকে বান্যিয়ার পুত বলে ডাকে। সবাই তাকে অসম্মানের দৃষ্টিতে দেখে, উপহাস করে, মালুয়ার বাচ্চা বলে গালি দেয়। এ জন্য হাসিমের তার বাবার ওপর খুব রাগ হয়। কেন যে বাবা প্রেমের তৃষ্ণায় মুসলমান হয়েছেন!

তার বাবা হরিমোহন কাজী বাড়ির মেয়ে জরিনার প্রেমে পড়ে জাত-পাত, সমাজ বিসর্জন দিয়ে মুসলমান হয়েছেন। কিন্তু জরিনাকে পাননি। প্রতারণার শিকার হয়ে কাজী বাড়ির দাসীকে বিয়ে করেন, দাসত্বে জীবন অতিবাহিত করে গেছেন। এখন ফল ভোগ করতে হচ্ছে হাসিমকে। পিতার ধর্মান্তরিত হওয়ার কারণে হিন্দু সমাজ তাকে ত্যাগ করলেও মুসলমান সমাজও তাদের সাদরে গ্রহণ করতে পারেনি। তাই হাসিমকে সবাই নিকৃষ্ট জীব বলেই দেখে।

হাসিমের অভাব-অনটনের সংসারে আছে কেবল তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সুফিয়া। স্নেহের বাঁধনে বেঁধে রেখেছেন তার দাদি। বুড়ি সাম্প্রদায়িক বেড়াজাল টপকে হাসিমের কাছে আসতে পারেন না। তাই চাল, ডাল, স্বামীর রেখে যাওয়া রুপার পয়সা নিয়ে রাতের আঁধারে লাঠি ভর করে ঠকঠক করে হাসিমের দরজায় উপস্থিত হন। হাসিমের কষ্টের কথা শুনে বুড়ি স্থির থাকতে পারেন না। এ যে রক্তের টান। ছেলের রেখে যাওয়া একমাত্র স্মৃতি। আবার রাতের আধারেই বুড়ি চলে যান। মুসলমান পাড়ায় এসেছেন, তা জানাজানি হলে বিপদ।

উপন্যাসে গ্রামের মানুষের জটিলতা ও শাসকশ্রেণির শোষণক্ষমতা ফুটে উঠেছে। ৩ সেপ্টেম্বর বইটি নিয়ে পাঠচক্র করেছে শাবিপ্রবি বন্ধুসভা। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ইউসিতে এটি অনুষ্ঠিত হয়। পাঠচক্র সঞ্চালনা করেন বন্ধু সুমি আক্তার।