বসন্তের প্রথম দিনে ভালোবাসা দিবসের রং ছড়িয়ে দিতে মোংলা বন্ধুসভার বন্ধুরা খুঁজে নিল এমন একদল মানুষের, যাঁরা অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। তাঁদের আরোগ্য লাভে মানসিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ও ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে বন্ধুরা ছুটে যান মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
মঙ্গলবার ছিল বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও পয়লা ফাল্গুন। উৎসব দুটিকে বরণ করতে বন্ধুরা প্রথমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণ করেন। এরপর সেখানে ভর্তি ৪১ রোগীর সঙ্গে দেখা করা, সুখ-দুঃখের গল্প বিনিময় এবং সবাইকে একটি করে লাল গোলাপ ফুল উপহার দেন। রং–বেরঙের বেলুন দিয়ে সজ্জিত করেন হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড।
মাতৃত্বকালীন সমস্যা নিয়ে ১৯ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি মোংলার আরাজী মাকোড়ঢোন গ্রামের আসমা বেগম। কোলে শিশুকে নিয়ে তিনি বলেন, হাসপাতালে তাঁকে দেখতে এতগুলো মানুষ আসবেন, যাঁদের তিনি চেনেনও না। সবকিছু তাঁর কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।
কথা হয় আরেক রোগী আবুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ৯ দিনের মতো হাসপাতালে ভর্তি। একঘেয়ে হয়ে উঠছিল জীবন। কখন যে ভালোবাসা দিবস এল, আর কখন যে বসন্ত এল টেরই পেলাম না। বন্ধুসভার বন্ধুরা হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জন্য বসন্তে রাঙানো ভালোবাসার রং নিয়ে এল।’
হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স দীপ্তি রানী বলেন, তিনি তাঁর কর্মজীবনে এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে কোনোদিনও যাননি। ভালোবাসা দিবসে ও বসন্তের প্রথম দিনে তাঁদেরকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানোয় বন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মোংলা বন্ধুসভার সভাপতি প্রসেন মন্ডল বলেন, ‘ভালোবাসা মানে আর্তমানবতার সেবায় ব্রত হওয়া। তাই আমাদের এমন কিছু করতে হবে, যাতে ভালোবাসার প্রকৃত অর্থ মানুষ খুঁজে পায়। এ জন্যই আমাদের আজকের এই আয়োজন।’
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. শাহীন বলেন, ভালোবাসা দিবস ও বসন্তবরণের এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনের জন্য মোংলা বন্ধুসভা প্রশংসার দাবিদার। বিশেষ করে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদেরকে ফুল দিয়ে কোনো সংগঠন এই দিনে ভালোবাসা ভাগাভাগি করে নেবে, এটা সত্যিই কল্পনাতীত।
সভাপতি, মোংলা বন্ধুসভা