দেশে গ্রামীণ পর্যটন এগিয়ে নিতে কাজ করবে বন্ধুসভা

বৈঠক শেষে অতিথিদের সঙ্গে বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

সারা দেশে প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। সাংগঠনিক এ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বন্ধুরা গ্রামীণ পর্যটন বিকাশে উদ্যোগী হতে পারেন। নিজেরাও হয়ে উঠতে পারেন পর্যটন উদ্যোক্তা। এতে যেমন কর্মসংস্থানের পথ তৈরি হবে, তেমনি শক্তিশালী হবে সাংগঠনিক কাঠামো। বন্ধুদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন ভারতের অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজমের প্রতিষ্ঠাতা ও অরুণাচল প্রাদেশিক সরকারের গ্রামীণ পর্যটনবিষয়ক উপদেষ্টা রাজ বসু।

আজ রোববার বিকেলে প্রথম আলো কার্যালয়ের বন্ধুসভাকক্ষে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে গ্রামীণ পর্যটন, হোম স্টে, ‘ভলানট্যুরিজম’ বা পর্যটন স্বেচ্ছাসেবা বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে কথা বলেন রাজ বসু। তিনি ছাড়াও অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজমের তন্নিষ্ঠা রায় রক্ষিত ও ওশান লেপচা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা নবম এশিয়ান পর্যটন মেলায় যোগ দিতে ঢাকায় এসেছেন।

অতিথিদের হাতে উপহার তুলে দিচ্ছেন জাতীয় পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক জাফর সাদিক
ছবি: বন্ধুসভা

হোম স্টের মূলমন্ত্র—অর্থের বিনিময়ে নিজের বাড়িতে পর্যটক সেবা। ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধারণাটি অনেক পুরোনো হলেও এ দেশে একেবারেই নতুন। রাজ বসু মনে করেন, এ ধারণাই জনপ্রিয় করতে কাজ করতে পারেন বন্ধুসভার বন্ধুরা। অর্থাৎ নিজেদের বাড়ির একটা অংশকে পর্যটকের থাকার সুব্যবস্থা করতে পারেন, তাঁকে আপ্যায়নসহ ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা করতে পারেন। যে কাজটি হয়তো বন্ধুরা এমনিতেও করে থাকেন।

গ্রামীণ পর্যটনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে রাজ বসু বলেন, ‘পৃথিবীর মানুষের দরকার নেই, কিন্তু মানুষের জন্য পৃথিবীর দরকার আছে। এই বেসিক বুঝটা আমরা হারিয়ে ফেলেছি বলে নিজেদের বড় মনে করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। পর্যটনের মাধ্যমে বিষয়টি মানুষের মধ্যে আমরা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করি। এ ক্ষেত্রে বন্ধুসভার বন্ধুরা কোথাও ঘুরতে গেলে কিংবা কোনো গ্রামীণ এলাকায় বেড়াতে গেলে, সেখানকার স্থানীয় লোকজন জীবিকার জন্য যে কাজটা করছে, সেটার মানোন্নয়নে সহায়তা করতে পারে।’

বৈঠকের একটি মুহূর্ত
ছবি: বন্ধুসভা

রাজ বসু উদাহরণ দিয়ে বলেন, কোনো বন্ধুর হয়তো কম্পিউটারে দক্ষতা আছে, কেউ হয়তো ভালো চিত্রাঙ্কন পারেন কিংবা কৃষিপ্রযুক্তি সম্পর্কে জানেন। বেড়াতে গিয়ে এসব বিষয় স্থানীয় মানুষদের জানাতে পারেন। এর মধ্য দিয়ে ঘোরাঘুরির পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমও হয়ে গেল। যাকে বলা হচ্ছে ‘ভলানট্যুরিজম’ বা পর্যটন স্বেচ্ছাসেবা।
বন্ধুসভা জাতীয় পর্ষদের সাবেক সহসভাপতি ও প্রথম আলোর শনিবারের ক্রোড়পত্র ‘ছুটির দিনে’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সজীব মিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশে গ্রামীণ পর্যটন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। বন্ধুসভার বন্ধুদের হাত ধরে এ খাত এগিয়ে যেতে পারে অনেক দূর।’

বন্ধুসভা জাতীয় পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক জাফর সাদিক বলেন, ‘বন্ধুসভার পর্যটন নিয়ে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। আমরা ভলানট্যুরিজম ও হোম স্টের ব্যাপারটা নিয়ে জাতীয় পর্ষদ থেকে পরিকল্পনা করব।’
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বন্ধুসভা জাতীয় পর্ষদের অর্থ সম্পাদক রুবাইয়াত সাইমুম চৌধুরী, ম্যাগাজিন সম্পাদক ফাহমিনা বর্ষা, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক সজল মিত্র রিচার্ড, ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক রেদোয়ান মাহমুদ রেজাসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা।

বৈঠক শেষে ভলানট্যুরিজম ও হোম স্টে এবং বাংলাদেশের পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা বিষয়ে বন্ধুসভার ফেসবুক পেজে একটি লাইভ অনুষ্ঠিত হয়। লাইভটি দেখুন