বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান লেখক, ঔপন্যাসিক, গল্পকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা জহির রায়হান। তাঁর অনবদ্য সৃষ্টি ‘সূর্যগ্রহণ’ ছোটগল্পটি নিয়ে পাঠচক্রের আসর করেছে নোয়াখালী বন্ধুসভা। ১৮ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় অনলাইন গুগল মিট অ্যাপে এটি অনুষ্ঠিত হয়। পাঠচক্রের আসর সঞ্চালনা করেন পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক শাহিদা রেশমি।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের চিত্র ফুটে উঠেছে এই গল্পে। গল্পটি আনোয়ার সাহেবের জবানিতে লেখা এবং তাঁর বন্ধু ভাষাশহীদ তসলিমকে কেন্দ্র করে রচিত। তসলিম ছিলেন একজন লেখক, যিনি কবিতা লিখতেন এবং আনোয়ার সাহেব ছিলেন তাঁর প্রথম শ্রোতা ও সমালোচক। ১৯৫২–এর একুশে ফেব্রুয়ারির সকালে তসলিম ভাষা আন্দোলনের মিছিলে গিয়ে আর ফেরেননি। মিছিলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। তসলিম ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম। দীর্ঘ এক বছর পরও তসলিমের পরিবার জানত না যে তাদের সন্তান জীবিত নেই। তসলিমের পরিবার এই কথা সহ্য করতে পারবে না বলে আনোয়ার সাহেব তাঁর পরিবারকে বলেননি। তসলিমের স্ত্রী হাসিনা নিয়মিত তাঁর জন্য চিঠি লিখত।
গল্পের মূল চরিত্র তুলে ধরে বন্ধু শান্ত চন্দ্র দে বলেন, ‘এই গল্পের মূল যে বিষয়টি ফুটে উঠেছে, তা হলো একজন আত্মত্যাগী শহীদ পরিবারের বাড়ি ফেরার অপেক্ষা, সংসারের হাল ধরার ইচ্ছা।’
সাংগঠনিক সম্পাদক সানি তামজীদ বলেন, লেখক বাস্তবিক ও কাল্পনিক ছোঁয়ায় একটি সুন্দর সত্য কাহিনি ফুটিয়ে তুলেছেন। একজন ভাষাশহীদের মাধ্যমে অনেক শহীদ ও যোদ্ধার পরিবারের চিত্র তুলে ধরেছেন।
পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক শাহিদা রেশমি বলেন, গল্পের অন্যতম মহানায়ক ও আত্মত্যাগী মানুষ হলেন আনোয়ার। যিনি বন্ধুর পরিবারের জন্য নিজের শ্রম ও ইচ্ছা ত্যাগ করেছেন। বর্তমান সময়ে এসে কেউ বন্ধুর পরিবারের জন্য এভাবে নিজেকে বিলিয়ে দেন না।
পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মো. শিমুল, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া সম্পাদক নজরুল ইসলাম, বন্ধু সানজিদা মাধবী, মো. হামীমসহ অন্য বন্ধুরা।
বন্ধু, নোয়াখালী বন্ধুসভা