‘লালসালু’ বাঙালি লেখক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত সামাজিক উপন্যাস। ১৯৪৮ সালে রচিত উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যের ধ্রুপদি সৃষ্টিকর্ম হিসেবে বিবেচিত। পটভূমি ১৯৪০ কিংবা ১৯৫০–এর দশকের বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজ হলেও এর প্রভাব বা বিস্তার কালোত্তীর্ণ। যুগ যুগ ধরে প্রচলিত কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও ধর্মীয় ভীতি এই উপন্যাসের উপজীব্য বিষয়। মজিদ নামের এক স্বার্থান্বেষী, ভণ্ড ধর্মব্যবসায়ীকে কেন্দ্র করে এর কাহিনি গড়ে উঠেছে। স্বার্থান্বেষণে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে অবশেষে সে মহব্বতনগর গ্রামে ঘাঁটি গাড়ে মাতব্বর খালেক ব্যাপারীর বাড়িতে।
২৪ অক্টোবর ভৈরব বন্ধুসভার বন্ধুরা উপন্যাসটি নিয়ে পাঠের আসরে বসেন। ১৮৫তম পাঠের আসরটি সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মানিক আহমেদ।
গ্রন্থ আলোচনা করতে গিয়ে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক সুমন মোল্লা কল্লোল যুগ সম্পর্কে ধারণা দিয়ে বলেন, ‘কল্লোল যুগ বাংলা সাহিত্যের এমন এক ক্রান্তিলগ্নকে বোঝানো হয়, যখন আধুনিক সাহিত্যের বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল। “লালসালু” উপন্যাসে বাংলাদেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের জীবনগাথা উঠে এসেছে। ধর্মান্ধতা, খোদাভীরু তাদের বাস্তবিক জ্ঞান থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে।’
উপন্যাসটিতে গ্রামের মানুষের সরলতা আর একজন অসাধু ধর্মব্যবসায়ীর কপটতা ফুটে উঠেছে। বন্ধু মাহিন আহমেদ বলেন, ‘খারাপ করলে খারাপই হয়, ভালো করলে ভালো। তাই আমরা ভণ্ডামির কোনো আশ্রয় না নিয়ে ভালোর পথে চলব।’
বন্ধু মেহেদী হাসান বলেন, ‘ধর্মকে পুঁজি করে মানুষ ব্যবসা করছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের সরলতার সুযোগ নিচ্ছে।’
গ্রন্থ আলোচনায় আরও যুক্ত হন উপদেষ্টা সুমাইয়া হামিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, অর্থ সম্পাদক নাফিস রহমান, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক সামির রহমান।
সভাপতি প্রিয়াংকা বলেন, ‘১৯৪৮ সালে রচিত উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট আজও যেন আমাদের গ্রামীণ অবয়বের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এখনো ধর্মীয় কুসংস্কারে ডুবে আছে মানুষ।’
গ্রন্থ আলোচনা শেষে মনোযোগী শ্রোতাদের জন্য ছিল কুইজ প্রতিযোগিতা। কুইজ পর্বের বিজয়ীরা হলেন সহসাংগঠনিক সম্পাদক আনাস খান, বন্ধু হান্নান হিমু ও ইফতি। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে তুলে দেওয়া হয় কিশোর আলো ম্যাগাজিন।
পাঠচক্র ও পাঠাগার সম্পাদক, ভৈরব বন্ধুসভা