ঘড়ির কাঁটায় তখন সময় ঠিক বিকেল চারটা। প্রথম আলোর চট্টগ্রাম অফিসের বন্ধুসভা কক্ষের সব বাতি বন্ধ। চারদিক নীরব অন্ধকার। টিভির স্ক্রিনে দৃশ্যমান হলো পঞ্চাশ-ষাট দশকের সাদা-কালো এক ছায়াছবি—‘শাপমোচন’। বাংলা চলচ্চিত্র বলতে ভেসে আসে যে জুটির নাম, তাঁরা হলেন মহানায়ক উত্তমকুমার ও মহানায়িকা সুচিত্রা সেন। উত্তমকুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধে সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগে উপহার দেন একের পর এক সুপারহিট সিনেমা।
৬ এপ্রিল ছিল মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের জন্মদিন। এ উপলক্ষে চট্টগ্রাম বন্ধুসভার চলচ্চিত্র উৎসবের ধারাবাহিক আয়োজনের এবারের পর্বের জন্য বেছে নেওয়া হয় জনপ্রিয় সিনেমা ‘শাপমোচন’। ২৬ এপ্রিল এটি প্রদর্শিত হয়। ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে, সুধীর মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় নির্মিত উত্তমকুমার ও সুচিত্রা সেন অভিনীত চলচ্চিত্র ‘শাপমোচন’।
বন্ধু কামরান চৌধুরী বলেন, বর্তমান যুগে এই জুটির চলচ্চিত্র দেখার সুযোগ হয়তো অনেকেরই থাকে না কিংবা প্রজন্মের কাছে তাঁরা অচেনা। তবে চট্টগ্রাম বন্ধুসভার চলচ্চিত্র উৎসবের এ পর্বে কিংবদন্তি এই জুটির চলচ্চিত্র ‘শাপমোচন’ দেখার আয়োজন করায় সত্যিই অভিভূত। সুন্দর গল্পের মাধ্যমে চলচ্চিত্রটি যেন রূপকথার মতো একটি কুসংস্কারাচ্ছন্ন পরিবারকে অভিশাপ থেকে মুক্ত করেছে, যা চলচ্চিত্রের শেষ দিকে বেশ ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এই চলচ্চিত্রে সবার অভিনয় ছিল মনোমুগ্ধকর। এ ছাড়া বিখ্যাত হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান বেশ ভালো লেগেছে।
আরেক বন্ধু প্রান্ত বড়ুয়া বলেন, ‘উত্তম-সুচিত্রা সফল ঐতিহাসিক জুটি। উত্তমকুমারের ঠাকুরদাদাকে তাঁর সংগীতগুরুর দেওয়া অভিশাপ এবং সুচিত্রা সেনের অভিশপ্ত তানপুরা ভেঙে উত্তমকুমারকে অভিশাপের হাত থেকে রক্ষা করার মাধ্যমে “শাপমোচন” নামের সার্থকতা নিহিত। ধন্যবাদ চট্টগ্রাম বন্ধুসভাকে এমন একটা চলচ্চিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের জন্মদিন উদ্যাপন করার জন্য।’
‘চলচ্চিত্রে নিজ ভাষা, নিজ সংস্কৃতি’ স্লোগানকে ধারণ করে চলছে চট্টগ্রাম বন্ধুসভার নিয়মিত চলচ্চিত্র উৎসবের এই আয়োজন।
বন্ধু, চট্টগ্রাম বন্ধুসভা